শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

যারা আগুন দিল তারা এখনো অধরা

খুলে দেওয়া হচ্ছে এমসি কলেজের সেই ছাত্রাবাস

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

ছাত্রলীগ-শিবিরের সংঘর্ষের সময় পুড়িয়ে দেওয়া সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাসটি অবশেষে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার চার বছর পর ছাত্রাবাসটিতে শিক্ষার্থীরা ওঠার সুযোগ পাচ্ছেন। গত দুবছর আগে পুনর্নির্মাণ কাজ শেষ হলেও গ্যাস সংযোগ না থাকায় ছাত্রাবাসটি এতদিন খুলে দিতে পারছিল না কলেজ কর্তৃপক্ষ। ছাত্রাবাস খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনো অধরা রয়ে গেছে অগ্নিসংযোগকারীরা।

২০১২ সালের ৮ জুলাই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষকালে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে আগুন দেওয়া হয়। এতে ছাত্রাবাসের ছয়টি ব্লকের মধ্যে তিনটি ব্লকের ৪২টি কক্ষ সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও ৭০টি কক্ষ। ঘটনার পরপরই পুরনো আদলে পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিনন্দন এ ছাত্রবাসটি। পুনর্নির্মাণ শেষে ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর এটি উদ্বোধন করা হলেও গ্যাস সংযোগসহ নানা জটিলতায় ছাত্রবাসটি খুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি গ্যাস সমস্যার সমাধান হওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রাবাসটি খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ছাত্রাবাসের ছয়টি ব্লকে আবাসন ব্যবস্থা হবে ২৪৪ জন শিক্ষার্থীর। ছাত্রাবাসে ওঠার সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ফি জমা দিতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে ১ অক্টোবর পর্যন্ত। এরপরই ছাত্রাবাসটিতে শিক্ষার্থী তোলা হবে বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তাহমিদ তাহসিন ও জাবির আহমদ জানান, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে থেকে সিলেটের অনেক বরেণ্য ব্যক্তি পড়ালেখা করেছেন। তাই কলেজের শিক্ষার্থীদেরও স্বপ্ন থাকে অধ্যায়নকালীন সময়ে এই ছাত্রাবাসে থাকার। এমসি কলেজের অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দ জানান, কলেজ ছাত্রাবাসটি শিক্ষার্থীদের বসবাসের উপযোগী করে প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সাক্ষাৎকার নিয়ে ছাত্রাবাসে ওঠার যোগ্য শিক্ষার্থীও বাছাই করা হয়েছে। আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত বাছাইকৃত শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে ওঠার ফি প্রদান করতে পারবে। এরপর শিক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রাবাসটি খুলে দেওয়া হবে। অগ্নিসংযোগের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে তা অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। ভবিষ্যতে এরকম ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সে জন্য সব দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এদিকে, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসটি খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও এখনো ধরা পড়েনি অগ্নিসংযোগকারীদের কেউই। অগ্নিসংযোগের পর ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর নাম উঠে এলেও পরবর্তীতে তদন্ত প্রতিবেদনে তা পাশ কাটিয়ে অজ্ঞাতনামা বহিরাগতদের দায়ী করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর