শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ দেখতে চায় চীন

——— লে.জে. মাহবুব (অব.)

শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ দেখতে চায় চীন

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান (অব.) বলেছেন, চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে গণতন্ত্রের শূন্যতা তুলে ধরা হয়েছে। এর জবাবে চীনের রাষ্ট্রপতি বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ দেখতে চাই। শান্তিপূর্ণ পৃথিবী চাই।

গতকাল বিকালে রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে প্রায় আধঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি দুই দেশের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের পর বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে কথা বলেন মাহবুবুর রহমান।

তিনি বলেন, বৈঠকে আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, চীনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক, বিএনপি এ সম্পর্ক দিন দিন আরও জোরালো দেখতে চায়। তবে বাংলাদেশে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হচ্ছে না। দেশের সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। দেশে গণতন্ত্র অনুপস্থিত। আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেতে সংগ্রাম করছি। চীন জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে। তারাও গণতন্ত্র চায়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এর জবাবের শি জিনপিং বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণ পৃথিবী চাই। শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ দেখতে চাই। সে লক্ষ্যে আমরা ‘ওয়ান বেল্ট’ ‘ওয়ান জোন’-এর কথা বলছি। সে লক্ষ্যে চীন কাজও করছে। আমরা আশা করি, এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধ হবে। চায়নার এটাই স্বপ্ন। বাংলাদেশ দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। আরও এগিয়ে যাবে। চীন বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকবে।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, চীন আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। দুই দিনের সফরে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং বাংলাদেশে এসেছেন। এ সফর বহুল প্রত্যাশিত ছিল। তার সঙ্গে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে কথা হয়েছে। বৈঠকে শি জিনপিং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করেছেন। তার স্মৃতিগুলো তুলে ধরেছেন। চীন-বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদারে জিয়াউর রহমানের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন। শহীদ জিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন। এর আগেও একাধিকবার বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তিন হাজার বছরের। বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই গড়ে দিয়েছেন। চীনের সঙ্গে আমাদের ‘পার্টি টু পার্টি’ সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়াও কান্ট্রি টু কান্ট্রি এবং জনগণ টু জনগণের সম্পর্কও রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট নিজের স্বপ্নের কথা বলেছেন। সব মানুষের সবকিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছেন। তার স্বপ্নের সঙ্গে বাংলাদেশকে পাশে চান তিনি। বাংলাদেশের জন্য বিশেষ একটি দরদ আছে। আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। এ সম্পর্ক আরও সুন্দর করতে হবে। চায়না স্বপ্ন বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকেও অংশীদার হিসেবে পাশে চায়। সে স্বপ্ন দিয়ে একটি অঞ্চল তৈরি করতে চায়। যেখানে মানুষের কোনো অভাব থাকবে না, হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না। কোনো দ্বন্দ্ব থাকবে না।’ জেনারেল মাহবুব জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট বিসিআইম নিয়ে কথা বলেছেন। বেগম জিয়াও এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। বাংলাদেশ, চীন, ইন্ডিয়া ও মিয়ানমার— এ চার দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে সমৃদ্ধির দ্বার আরও উন্মোচন হবে বলে বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয়। তবে বৈঠকে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন বা মানবাধিকার নিয়ে কোনো কথা হয়নি বলেও জানান মাহবুবুর রহমান।

সর্বশেষ খবর