রাজধানীতে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে পরিবার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পাঁচ দিন পার হলেও কোনো মামলা হয়নি পুলিশ বা পরিবারের পক্ষ থেকে। এমন পরিস্থিতিতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে রহস্য উদ্ঘাটনের কাজ। লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ কোনো মামলার সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না বলে জানা গেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য পুলিশ তাদের প্রায় দুই মাস অপেক্ষা করার কথা বলেছে, দাবি পরিবারের। পরিবারের দাবি, আজিজুল আত্মহত্যা করেনি। তাকে কেউ হত্যা করেছে। আবার পুলিশ বলছে, সে আত্মহত্যা করতে পারে। সে কারণে মামলা করা হয়নি। পরিবার মামলা করলে তা নেওয়া হবে।
জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে মোহাম্মদপুরের কাঁটাসুর এলাকায় আজিজুল হক (১৮) নামের এক তরুণের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার দুই হাত রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা নিয়ে অনিশ্চিত পুলিশ। কাঁটাসুরের শেরেবাংলা রোডের একটি টিনশেড ঘরে মা রোজিনা বেগমের সঙ্গে থাকতেন আজিজুল হক। রোজিনা বেগম বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের পরিচ্ছন্নতা কর্মীর চাকরি করেন। শুক্রবার দুপুরে পাশের বাসার এক শিশু আজিজুলকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে যায় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। আজিজুলের দুই হাত রশি দিয়ে বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো ছিল। হাত বাঁধা থাকায় এটি হত্যাকাণ্ড বলে সন্দেহ হয় সবার। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
আজিজুলের বড় ভাই রাব্বী জানান, ‘আমার ভাইয়ের আত্মহত্যা করার কোনো কারণ নেই। সে কেন আত্মহত্যা করবে? কারণ আত্মহত্যার যেসব আলামত প্রাথমিকভাবে দেখা যায় তার কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি।’ লাশ যখন ঝুলে ছিল তখন তার দুই হাত রশি দিয়ে বাঁধা ছিল— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে এখন পর্যন্ত সন্দেহ করতে পারছি না। কারণ কারও সঙ্গে আমার ভাইয়ের শত্রুতা ছিল না।’ মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল উদ্দিন মীর বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছেও রহস্য থেকে গেছে। আমরা এখন পর্যন্ত ঘটনার কোনো ক্লু খুঁজে পাচ্ছি না। আর মৃত্যুর ঘটনায় কোনো মামলাও হয়নি। মৃতের পরিবারের লোকজনদের বার বার ডেকে মামলা করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা আসছে না। পরিবারের লোকজন যে মামলাই করবে পুলিশের পক্ষ থেকে সে মামলাই নেওয়া হবে।’ পরিবার মামলা না করলে পুলিশ মামলা করবে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আমাদের যা করার তাই করব। প্রয়োজনবোধে ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করব। সেখানে জানা যাবে মৃত্যুর আসল রহস্য।’