রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

তামাকের গোডাউন আবাসিক এলাকায়

পুরান ঢাকার অভিশাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকাবাসীর কেমিক্যাল আর দুর্গন্ধের অভিশাপ কাটছেই না। ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর নিমতলী থেকে কেমিক্যাল গোডাউন সরানো হলেও আরমানিটোলা থেকে সরেনি তামাকের গোডাউন। এই গোডাউন ভবনে এখন হরিণের খামারও করা হয়েছে। এরসঙ্গে রয়েছে ভেড়ার খামার।

আরমানিটোলাবাসীর অভিযোগ, প্রতিদিন তাদেরকে নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে গ্রহণ করতে হচ্ছে বিষাক্ত তামাকের গন্ধ। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অভিযোগ করেও কোনো ফল হচ্ছে না। হাকিমপুরী তামাক কারখানার মালিকের ওই গোডাউনের কারণে শিশু, বৃদ্ধসহ সবাই মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্যগত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদেরকে তামাক সেবন না করেও প্রতিদিন বুক ভরে নিতে হচ্ছে বিষাক্ত হয়ে পড়া অক্সিজেন। এ কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গতকাল সরেজমিনে ওই স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, শরত্চন্দ্র চক্রবর্তী রোডের জনবহুল একটি এলাকা আরমানিটোলা। অভিযোগ উত্থাপিত ৯৬/১ নম্বরের বাড়িটি ছয়তলা। পুরো ভবনটিকে বানানো হয়েছে তামাকের গোডাউন। তার মধ্যেই বসবাস করেন ভবনের মালিক ও তার পরিবার। হাকিমপুরী জর্দার মালিক ভবনের তিনটি তলা এবং সপ্তমতলা ব্যবহার করছেন জর্দার গোডাউন ও হরিণ পালনে। প্রায় তিন থেকে চারটি হরিণ রয়েছে সপ্তমতলায়। একই সঙ্গে দেয়াল দিয়ে আলাদা করে পালন করা হচ্ছে ভেড়া। প্রায় শ’খানেক ভেড়া রয়েছে এই তলায়। এছাড়া ভবনের তিনটি তলায় রাখা হয়েছে বিষাক্ত জর্দার রাসায়নিক পদার্থ এবং বস্তা ভর্তি হাকিমপুরী জর্দা। জানা গেছে, ওই ভবনের পার্শ্ববর্তী এক বাসিন্দা তামাক ও পশু বর্জ্যের গন্ধের কারণে তার আট ও নয়তলা ভাড়া দিতে পারছেন না। দক্ষিণ দিকে হাকিমপুরী জর্দার গোডাউন আর হরিণের সঙ্গে ভেড়া পালনজনিত উগ্র গন্ধে বসবাস করা অনেকের জন্যই দুরুহ হয়ে উঠেছে।

পার্শ্ববর্তী ভবনের সপ্তমতলার এক ভাড়াটিয়া বলেন, দক্ষিণের জানালা খুললেই পাশের ভবনের ভেড়ার উগ্র গন্ধ ঢোকে। এ গন্ধ এতটাই বিষাক্ত যে সুস্থ থাকা কঠিন। ভবনের মধ্যে হরিণ পালনের ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না কোনো আইন। ভবনের চারদিকে দেয়াল দিয়ে পালন করা হচ্ছে এ হরিণ। সরেজমিনে গিয়েও দেখা গেছে, হরিণগুলো ফ্লোরের মধ্যে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এর পাশে ভেড়া পালন করা হচ্ছে।

তবে হাকিমপুরী জর্দার মালিকের ছেলে মানিক দাবি করেন, এই ভবনে কোনো জর্দার গোডাউন নেই। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তাছাড়া আইন মেনেই ভবনে হরিণ পালন করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর