মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঢাকাবাসীর দুর্ভোগ মৌচাক মগবাজার ফ্লাইওভার

আজ পরিদর্শনে আসছে সংসদীয় সাব কমিটি

আহমদ সেলিম রেজা

রাজধানীবাসীর কাছে এখন সবচেয়ে বড় দুর্ভোগের নাম মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার। দফায় দফায় সময় বেড়েছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু কাজ আর শেষ হচ্ছে না। এখনো মাটির নিচ থেকে পিলার তোলার কাজ চলছে। অথচ আগামী ডিসেম্বরে ফ্লাইওভার চালুর সর্বশেষ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর আগের ঘোষণা ছিল গত মার্চের। অবশ্য এরমধ্যে এই ফ্লাইওভারের তেজগাঁও সাতরাস্তা-হলিফ্যামিলি রমনা লুপ এবং ইস্কাটন থেকে মৌচাক লুপের কাজ শেষ হওয়ায় যানচলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে রামপুরা থেকে মালিবাগ-মৌচাক হয়ে শান্তিনগর এবং রাজারবাগ-থেকে মগবাজার পর্যন্ত অর্ধেক কাজ এখনো চলমান।

গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, মালিবাগ মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত মাটি খুঁড়ে গর্ত করে পিলার তোলার কাজ চলছে। তার পাশ দিয়েই যানচলাচলের ভাঙাচোরা সরু প্যাসেজ। মাথার ওপরে বা পায়ের নিচে বেরিয়ে আছে রডের মাথাসহ নানা নির্মাণ সামগ্রী। এরপরও সেখান দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে মানুষ, রিকশাসহ সব যান্ত্রিক যানবাহন। শান্তিনগর থেকে রেলগেট পর্যন্ত রাস্তাটুকু পেরুতে লেগে যাচ্ছে কখনো আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা। জীবনের তাগিদে এ পথে চলাচলকারী নাগরিক ও পথচারীদের চলতে হচ্ছে ধুলা-বালি-কাদা-যানজট-জনজট উপেক্ষা করে।

জানা গেছে, মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ও জনগণের এই দুর্ভোগ স্বচক্ষে দেখতে আজ মালিবাগ এলাকা পরিদর্শনে আসছেন এক নং সংসদীয় সাব কমিটি। কমিটি তেজগাঁও শিল্প এলাকার (রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স সংলগ্ন) প্রকল্প সাইট অফিস থেকে পরিদর্শন শুরু করে কাজের গতি ও মান যাচাই করবে। এর আগে এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন এ ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার এবং জনগণের যাতায়াতের সুবিধার জন্য চলাচলকারী রাস্তা মেরামতের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। জানা যায়, ২০১১ সালে একনেকে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ২০১৪ সালের মধ্যে ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়নি। এর পরে সময় নির্ধারণ করা হয় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। তারিখ পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ হয়নি। সর্বশেষ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, রামপুরা থেকে মালিবাগ মৌচাক হয়ে রাজারবাগ-শান্তিনগরের কাজটি শেষ করতে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। এরমধ্যে খরচ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। আর দুর্ভোগ বেড়েছে শতগুণ। কবে নাগাদ ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হবে, তাও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছে না। প্রথম ধাপে প্রকল্পের খরচ ছিল ৩৪৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় ধাপে খরচ নির্ধারণ করা হয় ৭৭২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। তৃতীয় ধাপে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ১ হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। তবে এ খরচেও নির্মাণ কাজ শেষ করা নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর