শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার হয় মাদক আর অস্ত্র আনা-নেওয়ায়

জাবি মেডিকেলের খণ্ডচিত্র

নাহিদুর রহমান হিমেল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের অ্যাম্বুলেন্সগুলো শিক্ষার্থী বা রোগীরা ব্যবহারের সুযোগ না পেলেও এ সুযোগ পাচ্ছেন প্রভাবশালীরা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এরা তাদের ব্যক্তিগত কাজে এগুলো ব্যবহার করছেন। এ ক্ষেত্রে মাদক এবং অস্ত্রশস্ত্র আনা-নেওয়ার কাজও অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এ অ্যাম্বুলেন্সগুলো কখনো ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী, কখনো শিক্ষক-কর্মকর্তারা ব্যবহার করছেন। ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্সেই আসে মাদকদ্রব্য, ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র। এ ছাড়া অনেক নেতা-কর্মী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে ঘুরে বেড়ান বলেও অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট চারটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। এর তিনটি চিকিৎসা কেন্দ্রের অধীন এবং একটি উপাচার্যের অধীন। চিকিৎসা কেন্দ্রের তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে বর্তমানে দুটি সচল রয়েছে। প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অনেক সময়ই শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায় না। অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী আর শিক্ষক-কর্মকর্তাদের যখন তখন অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের কারণে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনের সময় অ্যাম্বুলেন্স পান না। আবাসিক হলে রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য নেতা-কর্মীরা ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র মজুদ রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব হলেই রয়েছে পর্যাপ্ত ধারালো অস্ত্র। আর এসব অস্ত্র মজুদের একমাত্র নিরাপদ বাহন হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স। এ ছাড়া হলভেদে কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে নেতা-কর্মীরা এ অ্যাম্বুলেন্সেই আনেন মাদকদ্রব্য। এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, অ্যাম্বুলেন্সে করে বাজার করা, বাসায় আগত অতিথিদের যাতায়াতের সুব্যবস্থা করা, আত্মীয়স্বজনের বাসায় যাওয়া এবং স্কুলের বাচ্চাদের আনা-নেওয়া করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সুবিধাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা। এমনকি বিয়ে বা কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণে গেলেও ব্যবহৃত হয় অ্যাম্বুলেন্স।

অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দের ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. মোজেজা জহুরা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে অন্য হাসপাতালে রেফার্ড করি। আর কিছু ক্ষেত্রে অন্য হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্স চাওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে আমরা তাদের মেডিকেল ডকুমেন্ট চেক করে অ্যাম্বুলেন্স দিই। তবে মিথ্যার আশ্রয়ে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যদি কেউ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে থাকেন, সেটা তো আমাদের জানার উপায় থাকে না।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর