রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

১৮ হাজার শিক্ষার্থীই পরিবহনসেবার বাইরে

রাশেদ হোসাইন, জবি প্রতিনিধি

১৮ হাজার শিক্ষার্থীই পরিবহনসেবার বাইরে

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য বাস বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ১৪টি। এ ১৪টি বাস প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী বহনে সক্ষম। ফলে ১৮ হাজার শিক্ষার্থীই পরিবহনসেবার বাইরে। এ হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকরা ৭ ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সুবিধা পান। বাকি ৯৩ ভাগ পরিবহন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অন্যদিকে বাইরের বাসে চড়তে গিয়ে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তা ছাড়া বাস কমিটির সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত আসন শিক্ষার্থীদের জন্য দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি করেছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকল পরিবহনগুলো সংস্কারে কোনো ধরনের তত্পরতা নেই প্রশাসনের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিস সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের জন্য ১২টি দোতলা ও ২টি এক তলা বাস ১৪টি রুটে চলাচল করছে। এর মধ্যে ২টি বাস নিজস্ব আর ১২টি ভাড়ায় চালিত। প্রতিটি দ্বিতল বাসের ধারণক্ষমতা ১০০ জন। কিন্তু ধারণক্ষমতার ২-৩ গুণ শিক্ষার্থী বাসে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন প্রতিনিয়ত। এর ফলে প্রায় সময়ই ঘটে দুর্ঘটনা। গত বছরের ২৪ নভেম্বর সাভার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা বংশী বাস থেকে পড়ে গিয়ে মাসুক নামে এক শিক্ষার্থী মারা যান। অন্যদিকে নৃবিজ্ঞান বিভাগের আতিকুর রহমান পাবলিক বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে বাস দুর্ঘটনায় নিহত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশী বাসে নিয়মিত যাতায়াতকারী নিলয় নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বংশী বাসটি রাজধানীর গাবতলী স্টপিজে আসার আগেই পূর্ণ হয়ে যায়। তাই ধাক্কাধাক্কি করে উঠি। আর না হয় পাবলিক বাসে করে ক্যাম্পাসে আসি। আবার যাওয়ার সময়ও আগে সিট দখল করতে পারলে বাসে বাসায় যাই। বিআরটিসির বাসগুলো অনেক পুরনো হওয়ায় সিটগুলো লক্কড়-ঝক্কড় হয়ে আছে। আমরা আরও বাস চাই।’

এ ছাড়া উল্কায় যাতায়াতকারী কানিজ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি রাজধানীর বনশ্রী থেকে ক্যাম্পাসে যাই। উত্তরা হয়ে বাসটি বনশ্রী আসার আগে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। ফলে ওঠার কোনো সুযোগ থাকে না। আর বাস কমিটির নাম ভাঙিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী মেয়েদের সিট দখল করে রাখেন।’

রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্যানুযায়ী, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রায় ২০ হাজার। প্রতি সেমিস্টারে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে যাতায়াত বাবদ ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়; যা এক বছরে দুই সেমিস্টার হিসাবে মোট ৮ কোটি টাকার ওপরে গিয়ে দাঁড়ায়। তার পরও ভয়াবহ পরিবহন সংকট দূর হচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বাস সংকটের কথা আমরা জানি। চেষ্টা করছি সমস্যা সমাধানের। এ বছর নতুন ৪টি বাস যোগ হবে।’

সর্বশেষ খবর