বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চলে গেলেন ছানু

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলে গেলেন ছানু

যুক্তরাজ্য শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট সমাজসেবক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিয়া আক্তার হোসেন ছানু ইন্তেকাল করেছেন  (ইন্না লিল্লাহি ... রাজিউন)। লন্ডন প্রবাসী এই সমাজসেবক ও সংগঠক সম্প্রতি দেশে আসেন। গতকাল সকালের দিকে ঢাকার শান্তিনগরে নিজ বাসায় হূদরোগে আক্রান্ত হন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৫০ বছর। তার মৃত্যুতে দেশে ও লন্ডনে বন্ধু-বান্ধব, শুভানুধ্যায়ীসহ পরিচিতদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। শেষ বারের মতো একনজর দেখতে হাসপাতালে ভিড় জমান বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা। মিয়া আক্তার হোসেন ছানুর মৃত্যুতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পৃথক বার্তায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। সর্বশেষ গত সপ্তাহে তিনি প্রায় তিন সপ্তাহের জন্য দেশে আসেন। নিজ এলাকা সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে গত ১৯ ও ২০ নভেম্বর দুই দিনব্যাপী শাহ আবদুল করিমের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি ছিলেন ফেসবুক অ্যাক্টিভিস্ট। নিয়মিত ফেসবুকে সক্রিয় এই সমাজকর্মী সর্বশেষ ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন গতকাল সকাল ১০টার দিকে। যাতে তিনি লিখেন— ‘গুড মর্নিং ঢাকা।’

এক মেয়ে ও দুই ছেলের জনক আক্তার হোসেন ছানু সপরিবারে লন্ডন থাকেন। তার মৃত্যুর সংবাদ জানার পর স্ত্রী-সন্তান ও তার বৃদ্ধা মা লন্ডন থেকে দেশের উদ্দেশে আজই রওনা হবেন। তারা লন্ডন থেকে রওনা হয়ে আগামীকাল সকাল ১০টায় সরাসরি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামবেন। ওই দিন সকালেই বারডেম থেকে আক্তার হোসেন ছানুর মরদেহ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামসী গ্রামে নেওয়া হবে। তার মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হয়েছে। পরে বাদ আসর জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

এই বিশিষ্ট সমাজসেবকের মৃত্যুতে লন্ডন ও তার নিজ এলাকা সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ জানিয়েছেন, মিয়া আক্তার হোসেন ছানু শ্রীরামসী গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম মরহুম মকবুল হোসেন। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড় ছানু শৈশবেই যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। তিনি আশির দশকে গড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন শাপলা ইয়ুথ ফোর্সের সভাপতি। রাজনৈতিক কর্মী, সংগঠক বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে সব মহলে পরিচিত ছানু ছিলেন যুক্তরাজ্য শাখা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের চলমান আন্দোলনে তিনি দেশে-বিদেশে সক্রিয় ছিলেন। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ১৯৯২ সালে শ্রীরামসীতে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও সৈয়দ হাসান ইমামের উপস্থিতিতে সমাবেশ করেছিলেন। সজ্জন রাজনীতিবিদ ও নিঃস্বার্থ সমাজসেবক হিসেবে নিজ এলাকা এবং যুক্তরাজ্যে পরিচিত হয়ে ওঠা ছানু নিয়মিত দেশে আসা-যাওয়া করতেন।

সর্বশেষ খবর