মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কাণ্ডারিহীন সিসিকে স্থবির উন্নয়ন কার্যক্রম

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

কাণ্ডারিহীন সিসিকে স্থবির উন্নয়ন কার্যক্রম

মেয়রের চেয়ারে বসেই আরিফুল হক চৌধুরী শুরু করেছিলেন ‘অ্যাকশন’। সিলেট মহানগরীর চেহারা পাল্টে দিতে সহযোদ্ধা কাউন্সিলরদের নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। তার জঞ্জালমুক্ত পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ার চেষ্টা প্রশংসিত হয়েছিল সর্বত্র। কিন্তু দায়িত্ব পাওয়ার দেড় বছরের মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় কারান্তরীণ হয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর কাণ্ডারিবিহীন হয়ে পড়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক)। এরপর থেকে ধীরে ধীরে সিসিকের উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হতে থাকে বলে অভিমত জনপ্রতিনিধি ও নগরবাসীর।

২০১৩ সালের ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হয় সিসিকের নির্বাচন। নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থী, টানা দুইবারের মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে হারিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসেন বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী। মেয়রের চেয়ারে বসেই আরিফ নগরভবনে আটকে থাকেননি। কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে চালান জোর চেষ্টা। বছরখানেকের মধ্যেই নগরীর ফুটপাথ দখলমুক্তকরণ, ছড়া-খাল উদ্ধার করে জলাবদ্ধতার সমাধান, যানজট নিরসনের চেষ্টায় অনেকটা সফল হন তিনি। গতি পায় নগরীর উন্নয়ন কার্যক্রমে।

মেয়রের চেয়ারে বসার প্রায় এক বছরের মধ্যে শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলা ও হত্যার ঘটনায় বিস্ফোরক মামলায় অভিযুক্ত হন আরিফ। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। মাঝে একবার মায়ের অসুস্থতার কারণে সপ্তাহ দুয়েকের জন্য জামিন পেয়েছিলেন তিনি। এরই মধ্যে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি আরিফকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। পরে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের চেয়ার দখল নিয়ে দুই প্যানেল মেয়রের দ্বন্দ্ব আদালত পর্যন্ত গড়ালে শূন্য থেকে যায় মেয়ারের পদটি। আরিফুল হক চৌধুরী জেলে যাওয়ার পর থেকে সিসিকের উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। গতিহীন হয়ে পড়ে বিভিন্ন কার্যক্রম।

মন্ত্রণালয় থেকে সিসিকের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীবকে। জনপ্রতিনিধি ও নগরবাসী মনে করছেন, মেয়র না থাকায় সিসিকে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হচ্ছে না। সামাজিক সংগঠন চেইজ বিগিনস-এর সভাপতি তামিমুল করিম হৃদয় বলেন, আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ফুটপাথকে হকারমুক্ত ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ছড়া-খাল দখলমুক্তের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বরখাস্ত হওয়ার পর মেয়রবিহীন নগরীতে এই সমস্যাগুলো আবারও প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর