তিন বছর আগে ‘গুম’ হওয়া ২০ ব্যক্তির কোনো হদিস এখনো মেলেনি। তাদের খুঁজে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্বজনরা। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বজনরা অভিযোগ করেন, র্যাব, পুলিশ বা ডিবি পরিচয়ে ওই ২০ জনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একই দিন পৃথক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, গুম বলে কোনো শব্দ নেই। নিজেরাই আত্মগোপনে গিয়ে গুমের অভিযোগ তুলছে অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাজধানীর পশ্চিম নাখালপাড়ার বাসিন্দা আমিনুল হক বলেন, ‘আমার ছেলে লেখাপড়া করত। ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর বাসার কাছ থেকে আমার ছেলে রাসেলকে তুলে নিয়ে যায়। একই দিনে আরও সাতজন মানুষ হারিয়ে গেল। পুলিশ-র্যাবের কাছে যেতে যেতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। তারা বলছে, তারা নেয়নি। তবুও আশা ছাড়িনি। ছেলেটাকে যদি ফিরে পাই...। ওই বছর এই আটজনসহ মোট ২০ জন নিখোঁজ হন বলে সংবাদ সম্মেলনে তাদের স্বজনরা দাবি করেন। আমিনুল হকের মতো অন্য স্বজনদের কান্না ও আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে জাতীয় প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনের কক্ষটি। স্বজনরা জানান, নিখোঁজ ব্যক্তিদের বেশির ভাগই ছাত্র ছিলেন। তাদের অপরাধের রেকর্ডও নেই। তাদের খুঁজে পেতে পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কোনো তত্পরতা চালায়নি বলেও অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে বারিধারা থেকে অবিভক্ত সিটি করপোরেশনের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩৪), তার খালাতো ভাই জাহিদুল করিম ওরফে তানভীর (৩০), পূর্ব নাখালপাড়ার কাদের ভূঁইয়া ওরফে মাসুম (২৪), পশ্চিম নাখালপাড়ার মাঝহারুল ইসলাম ওরফে রাসেল (২৪), মুগদার আসাদুজ্জামান ওরফে রানা (২৭) ও উত্তর বাড্ডার বেরাইদ এলাকার আল আমিনকে (২৬) র্যাব পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর রাত ২টার দিকে শাহীনবাগের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এ এম আদনান চৌধুরী (২৮) ও গাড়িচালক কাওসার (২৫) নামের আরও দুজনকে।