সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

পদ্মায় রেল সংযোগ প্রকল্পের তত্ত্বাবধান করবে সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের তত্ত্বাবধান করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট (সিএসসি)। তাদের সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিআরটিসি (ব্যুরো অব রিসার্চ টেস্টিং অ্যান্ড কনসালটেন্ট)। রেল সংযোগ প্রকল্পের তত্ত্বাবধান বিষয়ে গতকাল সিএসসির সঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একটি চুক্তি হয়েছে।

রেলভবনে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক সুকুমার ভৌমিক এবং সেনাবাহিনী ও বিআরটিসির পক্ষ থেকে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক, সিএসসি কর্নেল মো. আবুল কালাম আজাদ। এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলওয়ের পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, পদ্মা সেতুতে একই সঙ্গে রেল চলাচলের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সঠিক সময় নির্মাণকাজ শেষ করতে পরামর্শক কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর কাছে ন্যস্ত পদ্মা বহুমুখী সেতুর তিনটি প্রকল্পের মধ্যে দুটি প্রকল্প যথাসময়ে সম্পন্ন করে বাংলাদেশ ব্রিজ অথরিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সিএসসির কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্বের নতুন মাইল ফলক রচিত হয়েছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক করপোরেশনের সদস্য দেশসমূহের আন্তঃদেশীয় যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের লক্ষ্যে সুষ্ঠু রেলওয়ে কানেকটিভিটি স্থাপন হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পেট্রাপোল-বেনাপোল-যশোর হতে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা পর্যন্ত কানেকটিভিটি প্রদানের মাধ্যমে ট্রান্স এশিয়া রেলওয়ে রুটের সঙ্গে নতুন রুট হিসেবে সংযোগ স্থাপিত হবে। এটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নতি সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সিএসসির এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৪২ কোটি টাকা। পরামর্শক সেবাকাল দুই হাজার ১০০ দিন। এই সেবার আওতায় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা ঠিকাদারের দাখিল করা নকশা যাচাই করে তার অনুমোদন দেবেন। এ ছাড়া রেলের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, সাইট ক্লিয়ারেন্স এবং পুনর্বাসন কার্যক্রমে সহায়তা ও তদারকি করবে। এর বাইরে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে নির্মাণকাজ সুষ্ঠু তদারকিসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণসহ যোগ্যতা বৃদ্ধি করা পরামর্শক সেবার মধ্যে রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ১৪টি নতুন স্টেশন ভবন ও ছয়টি স্টেশন পুনর্নির্মাণ, ৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু এবং ২৪৪টি ছোট সেতু নির্মাণ, ১০০টি নতুন রেলকোচ কেনা এবং আধুনিক সিগন্যাল সিস্টেমের জন্য অপটিক্যাল ফাইবার লাইন স্থাপন করা হবে।

প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য সিএসসিকে সুপারভিশন পরামর্শক হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি গত ২০ ডিসেম্বর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সায় পায়।

সর্বশেষ খবর