শুক্রবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

নেতা-কর্মীদের অনুপস্থিতিতে মহিউদ্দিন-নাছিরের ক্ষোভ

চট্টগ্রামে ৫ জানুয়ারির সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচিতে নগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাঙ্ক্ষিত অনুপস্থিতিতে দলের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দলের শীর্ষ দুই নেতাই সংগঠনের নিষ্ক্রিয় নেতা-কর্মীদের সমালোচনা করে বলেছেন, দায়িত্ব পালন না করলে সসম্মানে পদ ছেড়ে দিন। অন্যথায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন উপলক্ষে ‘স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষায় সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে আমরা আলোর পদযাত্রী’ শীর্ষক সমাবেশ গতকাল নগরীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটানোর ঘোষণা ছিল নগর আওয়ামী লীগের। এ লক্ষ্যে শহীদ মিনারের সামনের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। কিন্তু নেতা-কর্মীদের আশানুরূপ উপস্থিতি ছিল না। নগর কমিটির কয়েকজন সহসভাপতি ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং নির্বাহী কমিটির কিছু সদস্য সমাবেশে অনুপস্থিত ছিলেন। ফলে সমাবেশ মঞ্চের সামনে ছাড়া পুরো সড়কই ছিল ফাঁকা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের মধ্যে মাত্র উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের এমপি বেগম সাবিহা নাহার মুসা। হাতো গোনা কয়েকটি ওয়ার্ড ও থানা থেকে মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন। সভাপতির বক্তব্যে এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে ৬০ জন নেতা আছেন। এ ৬০ জন অবশ্যই তার অন্যান্য নেতা-কর্মী নিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে আসবেন। একা এলে হবে না। আমি এলাম, মিটিংয়ের সামনে বসে বসে পা নাড়ালাম, তা হবে না। বহুত সহ্য করছি। এক দিন, দুই দিন, তিন দিন। আর সহ্য নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমার বয়স হয়েছে। চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। তবু আমি সব সভা-সমাবেশে আসি। কষ্ট হোক, আমি বেঁচে তো আছি। যত দিন বেঁচে থাকব, দলের জন্য কাজ করে যাব। এখন দল ক্ষমতায়। সেজন্য অনেকে কর্মসূচিতে আসছেন না। তারা নিজের লাভের জন্য দল করছেন।’ আ জ ম নাছির উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা যারা দল করছি, কে কোন পদে আছি সেটা বড় কথা নয়। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলের জন্য কাজ করতে হবে। অনেকে পদে আছেন অথচ দায়িত্ব পালন করেন না। দলের সভা-সমাবেশে আসেন না। এটা আর হবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদেরও তো কাজ থাকে। আমরাও তো বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করি। অথচ আমরাই সভা-সমাবেশে উপস্থিত থাকি। আমরা পারলে আপনারা পারবেন না কেন? পদ নিয়ে বসে থাকবেন, সভা-সমাবেশে আসবেন না, এটা হবে না। শুধু মহানগরের কথা বলছি না, তৃণমূলের ওয়ার্ড-ইউনিটের নেতা-কর্মীদের কথাও আমি বলছি।’

পদধারী নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি দলকে ভালোবাসেন, জাতির জনকের প্রতি যদি আপনাদের চুল পরিমাণ শ্রদ্ধা-আস্থা থাকে, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি যদি আপনাদের বিন্দুমাত্র সম্মান থাকে, তাহলে দায়িত্ব পালন করুন। অন্যথায় সসম্মানে অব্যাহতি নিন, পদ ছেড়ে দিন। শিগগিরই কার্যকরী কমিটির সভা ডাকব। যারা পদ নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন না, তাদের সম্মানজনকভাবে পদ থেকে বিদায় দেব। আর যারা সংগঠনের পেছনে সময়, শ্রম দিচ্ছেন, তাদের পদে মূল্যায়ন করব।’

সংসদ সদস্যের উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা অনেককে এমপি বানিয়েছেন। আজকে দলের এত গুরুত্বপূর্ণ একটা কর্মসূচি, অথচ মাত্র একজন এমপি উপস্থিত হয়েছেন।’

নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য সাবিহা মুসা, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, অর্থ সম্পাদক আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, উপ-প্রচার সম্পাদক শহীদুল আলম প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর