মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

রংপুরে ৬ বছরে ৪৬ মামলা একটিরও বিচার হয়নি

সংখ্যালঘুর ওপর হামলা, নির্যাতন

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

রংপুরে গত ছয় বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে ৪৬টি। এর মধ্যে একটিরও বিচার সম্পন্ন হয়নি। আর ১৩টি ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে সত্যতা পায়নি তদন্তকারীরা। ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এসব মামলা দায়ের হয়। পুলিশের রংপুর রেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, আট জেলায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় ৪৬টি মামলার মধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে ১৯টির। তদন্তাধীন রয়েছে ১৪টি মামলা। আর ১৩টি মামলায় তদন্তে সত্যতা মেলেনি। ফলে এসব মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। সর্বাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে ২০১৪ সালে। মামলা হয়েছে ১৯টি। ২০১৩ সালে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে সাতটি। ২০১৫ সালে সাতটি, ২০১২ সালে একটি এবং ২০১১ সালে দুটি মামলা হয়। আর চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মামলা হয়েছে ৯টি।

বেশি হামলার শিকার হয় গাইবান্ধা ও দিনাজপুরের সংখ্যালঘু পরিবার। সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা ঘটে গত বছর ৬ নভেম্বর গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জের সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মে সাঁওতালদের ওপর। এতে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের তিনজন মারা যান। আহত হন অনেকে। এ হামলার মূল হোতা স্থানীয় সরকারদলীয় এমপি আবুল কালাম আজাদ ও স্থানীয় সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাকিল আহমেদ বুলবুল রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এদিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। তাদের অভিযোগ, বিচার হলে এ ধরনের ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি হতো না।

হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও রংপুর মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়, মূল হোতারা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। মূল ব্যক্তিরা ধরা পড়লে ও প্রতিটি ঘটনার বিচার হলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতো না। যে কারণে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অবসানের দাবি জানানো হয়েছে। একই দাবিতে ৩১ ডিসেম্বর রংপুরে অবস্থান ধর্মঘট ও সমাবেশ করা হয়েছে।

রংপুর রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, বেশির ভাগ মামলার বিচার চলমান। বাকি মামলাগুলোরও অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। এ ছাড়া ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সব ধর্মের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে প্রতিটি উপজেলা ও জেলা শহরে সম্প্রীতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সবাই মিলে সর্বাত্মকভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর