মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সিলেটে নির্বাচনী রাজনীতিতে তৎপর আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে নির্বাচনী রাজনীতিতে তৎপর আওয়ামী লীগ

আগামী জাতীয় সংসদ ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে তত্পর হয়ে উঠেছেন সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতারা। এ নিয়ে তারা এখন পার করছেন অনেকটাই ব্যস্ত সময়। দলীয় কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়িয়ে তারা তাদের ভোটের রাজনীতির অবস্থান পাকাপোক্ত করছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ১৫ জুন। আগামী দেড় বছরের মধ্যে সিসিকের নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। জানা গেছে, ওই নির্বাচনে মেয়র পদকে টার্গেট করে এখন থেকেই তত্পরতা চালাচ্ছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা। এর মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান দুবার সিসিকের নির্বাচিত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। গত নির্বাচনে হারলেও মাঠ ছাড়েননি তিনি। ‘জনতার মেয়র’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া কামরান আগামী নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। গত বারের নির্বাচনের ভুল ও ব্যর্থতা কাটিয়ে নির্বাচিত নগরপিতা হিসেবে নগরভবনে ফিরতে তিনি প্রতিদিনই সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছেন।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এবার মাঠে রয়েছেন মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দীন আহমদ। কোনো কারণে কামরান মনোনয়ন না পেলে আওয়ামী লীগ থেকে আসাদ উদ্দীনই নির্বাচন করবেন— এমনটা মনে করছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। তাই আসাদও বসে নেই। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন সামাজিক কর্মকাণ্ডে। এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আবদুল মোমেন। গত বছর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নির্বাচন করবেন না ঘোষণা দিয়ে এ আসনে তার ভাই ড. মোমেন প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছিলেন। অর্থমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর ড. মোমেন সিলেটে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।

ওয়াকিবহাল সূত্র বলছে, সিলেট-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে অনেকটাই নির্ভার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী। গত জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নির্দেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে তিনি আসনটি ছেড়ে দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরীকে। ইয়াহইয়াকে বিজয়ী করতেও তার ভূমিকা ছিল অন্যতম। সংসদ সদস্য না থাকলেও এখন দলীয় কর্মকাণ্ডেই ব্যস্ত সময় পার করছেন শফিক চৌধুরী। সিলেটে দলকে সংগঠিত করা ছাড়াও এলাকার নিয়মিত সময় দিয়ে যাচ্ছেন ‘২৪ ঘণ্টার রাজনীতিবীদ’ হিসেবে পরিচিত পাওয়া এই রাজনীতিক। বিগত নির্বাচনে সিলেট-৫ আসনটিও জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। বর্তমানে ওই আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উপদেষ্টা সেলিম উদ্দিন। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে এ আসনটিতে আবারও প্রার্থী দিতে পারে আওয়ামী লীগ। সে লক্ষ্যে দলীয় মনোনয়ন পেতে এলাকায় জনসমর্থন আদায়ে তত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুক উদ্দিন আহমেদ এবং যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির। এ ছাড়া সিলেট-৬ আসনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন। বিগত জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট লুত্ফুর রহমানের পক্ষে এলাকায় প্রচারণায় নেমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভোটারদের মাঝে সাড়া ফেলার চেষ্টা করেন। 

এদিকে সিলেট-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী এবং সিলেট-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইমরান আহমদ আগামী নির্বাচনে দলীয় টিকিট পাওয়ার জন্য তত্পর রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর