খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) নতুন ভবন নির্মাণে পদে পদে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, নবনির্মিত একাডেমিক ভবন-৩ এ ছাদের পুরুত্ব দেওয়ার কথা সাড়ে ৫ ইঞ্চি, সেখানে দেওয়া হয়েছে সাড়ে ৩ ইঞ্চি। ভবনের মূল ভিত্তিস্তম্ভগুলোর পাইলিংয়ে ব্যাস-পরিধিও (ডায়া মিটার) কমানো হয়েছে। প্রায় একই অবস্থা নবনির্মিত ষষ্ঠতলাবিশিষ্ট ছাত্রী হল ভবনটিরও। ফলে বহুতল এই ভবন দুটির ব্যবহার ও স্থায়িত্ব ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা আর্থিকভাবে লাভবান হতে এই দুর্নীতি করেছেন। এ ঘটনার তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৩ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করেছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় প্রকৌশল বিভাগের চার কর্মকর্তাকে কারণ দর্শাও নোটিসও প্রদান করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১২-১৩ সালে নির্মাণ কাজ শুরু করা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবন-৩ এর মূল নকশা পরিবর্তন করে ভবনের মূল ভিত্তিস্তম্ভগুলোর পাইলিংয়ের ডায়া মিটার কমানো হয়েছে। পাশাপাশি ভবনের বিভিন্ন তলার ছাদের পুরুত্ব কমানো হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন তলায় ছাদে ঢালাইয়ের সময় রডের ব্যবহার কমিয়ে স্পেস বাড়ানো হয়েছে। ফলে ২০১৫ সালে ভবনটি ব্যবহার শুরুর পর থেকেই তৃতীয় তলার দক্ষিণ পাশের মেঝে সামান্য হাঁটা-চলায়ই কাঁপতে থাকে।
এদিকে বিশেষজ্ঞ কমিটি সরেজমিন একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলার মেঝেতে চার জায়গায় গর্ত করলে সেখানে ছাদের পুরুত্ব সাড়ে ৫ ইঞ্চির বদলে সাড়ে ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি করার প্রমাণ পেয়েছে। এই ভবনের সব কটি তলায়ই ছাদের পুরুত্ব এভাবে কমানো হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, এর আগে ২০১৪ সালে নির্মাণ শুরু করা ছয়তলা ছাত্রী হল ভবনের মূল ভিত্তির পাইলিং ডায়া ২৮ ইঞ্চি ও ২৪ ইঞ্চির জায়গায় কমিয়ে ২৬ ইঞ্চি ও ২২ ইঞ্চি করা হয়, যা সাইট ওয়ার্ক বুকে রেকর্ড রয়েছে। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবন নির্মাণের প্রথম পর্যায়ে ১ম ও ২য় তলায় নিম্নমানের কাজের ফলে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে বিপুল পরিমাণ বই নষ্ট হচ্ছে।প্রসঙ্গত, একাডেমিক ভবন-৩ ও লাইব্রেরি ভবনের প্রথম পর্যায়ের কাজ একই ঠিকাদার এসএনবি অ্যান্ড ডিএমসিএল (জেভি)-এর অধীনে হয়েছে।