শিরোনাম
শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

লাগামহীন ভর্তিবাণিজ্যে বিদ্যালয়

৯৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নোটিস

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চিটাগং গ্রামার স্কুলের ভর্তি ফি ৬৩ হাজার টাকা, মাসিক বেতন ১৯ হাজার টাকা। বাংলাদেশ মহিলা সমিতি স্কুলে ভর্তি ফি ১০ হাজার টাকা। মেরন সান স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি ফি ৭ হাজার টাকা, মাসিক বেতন ১ হাজার টাকা, ছাড়পত্র প্রদানে নেওয়া হয় ৫ হাজার ৫০০ টাকা। সরকারি নিয়মমতে ভর্তি ফি ৩ হাজার টাকা নির্ধারণ থাকলেও এসব প্রতিষ্ঠানে তা মানা হয়নি। এভাবে চট্টগ্রামে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো লাগামহীন ভর্তিবাণিজ্যে মেতে উঠেছে। মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র ও জেলা প্রশাসনের কঠোর হুঁশিয়ারিও ঠেকাতে পারছে না এ ভর্তিবাণিজ্য। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ভর্তিবাণিজ্যের অভিযোগে ৯৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নোটিস দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সরাসরি তদারকি শুরু করছে জেলা প্রশাসন।

লাগামহীন ভর্তিবাণিজ্য ঠেকাতে বুধবার রাতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন নগরের পাঁচ শিক্ষা থানায় পাঁচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে শিক্ষা অফিস ও কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধির সমন্বয়ে ছয় সদস্য করে পাঁচটি তদারকি কমিটি গঠন করেন। কমিটি গতকাল নয়টি প্রতিষ্ঠানে তদন্ত করে। অন্যদিকে ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখাও অতিরিক্ত ফি নেওয়া স্কুলগুলোর তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পাঁচটি তদন্ত টিম গতকাল নয়টি স্কুলে সরাসরি তদারকি করে। তারা এসব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছে। সব তথ্য সংগ্রহের পর অসঙ্গতিগুলো প্রতিবেদন আকারে বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হবে। মন্ত্রণালয় পরে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, নগরের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো প্রতিযোগিতামূলকভাবে লাগামহীন ভর্তিবাণিজ্য করছে। নিম্নবিত্ত দূরের কথা, মধ্যবিত্তরাও সন্তানদের পড়াতে হিমশিম খাচ্ছেন। নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রনি বলেন, ‘সরকারি নীতিমালা না মেনে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়কারী স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে এর আগে আমরা মানববন্ধন করেছি ও জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছি। এবার তাদের তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসনে জমা দেব। আশা করি প্রশাসন এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক আইনি ব্যবস্থা নেবে।’ জানা যায়, ১৭ জানুয়ারি জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে নগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-প্রধানদের নিয়ে সভা হয়। সভায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া বাড়তি টাকা ফেরত দিতে ১০ দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়। ২০১৬ সালেও স্কুলগুলো নানা অজুহাতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছিল। পরে আন্দোলনের মুখে কয়েকটি স্কুল কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত আদায়কৃত টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর