শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

শেয়ারবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের সুবিধা দিচ্ছে বিএসইসি

আলী রিয়াজ

শেয়ারবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের সুবিধা দিচ্ছে বিএসইসি

শেয়ারবাজারে ২০১০ সালে ভয়াবহ ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যেসব বিনিয়োগকারী পুরো পুঁজি হারিয়ে উল্টো ঋণদাতা ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের কাছে ঋণগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ফের শেয়ার লেনদেনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর শেয়ারবাজার ফের চাঙা মেজাজে ফেরায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ সুবিধার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি শেয়ারবাজার ক্রিয়াশীল ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের অনুরোধে বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জানা গেছে, বিএসইসি মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩(৫) ধারা অনুসারে, কোনো বিও অ্যাকাউন্টে মার্জিন ঋণ নিয়ে মূলধন ঋণাত্মক হলে গ্রাহক আর নিজে লেনদেন করতে পারেন না। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের হিসাবের লেনদেন করতে পারে। এতে গ্রাহকের কোনো মুনাফা করার সুযোগ থাকে না। ২০১০ সালে ভয়াবহ ধসে এমন কয়েক লাখ বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্ট ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। এরপর বিএসইসি সীমিত আকারে এসব অ্যাকাউন্টে লেনদেন করার সুযোগ দেয়। ২০১০ সালের ধসের পর বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএসইসি আলোচিত আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটির কার্যকারিতা কয়েক দফা স্থগিত করে। সর্বশেষ স্থগিতাদেশের মেয়াদ গত ৩১ জানুয়ারি শেষ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) অনুরোধে ডিএসই বিএসইসির কাছে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য প্রস্তাবটি পাঠিয়েছিল।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের পর থেকে টানা দরপতনে অসংখ্য মার্জিন অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগকারীর মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। ওই সব অ্যাকাউন্টে থাকা শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম এমন জায়গায় নেমে যায় যে, বিনিয়োগকারীর নিজস্ব মূলধন বলতে কিছু নেই। উল্টো গ্রাহকের কাছে টাকা পাবে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান। আইন অনুসারে এমন অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন নিষিদ্ধ। মার্জিন রুলসের ৩(৫) ধারায় বলা আছে, কোনো বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান তার কাছে নতুন করে মার্জিন চাইবে। এই মার্জিনের পরিমাণ এমন হবে যাতে তার ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের উপরে থাকে। নোটিস দেওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে পর্যাপ্ত মার্জিন জমা দেওয়া না হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে নতুন কোনো লেনদেনের অনুমতি দিতে পারবে না ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান। নতুন এ সুযোগে ২০১০ সালে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার একটি সুযোগ পাবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। জানতে চাইলে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজার এখন চাঙা মেজাজে ফিরেছে এর অর্থ এই নয় যে, বাজারে ঝুঁকি নেই। যারা শেয়ারবাজার মেনুপুলেশন করে তাদের আটকাতে হবে। বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এসব থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বিএসইসি যে সুবিধা দিয়েছে এটা অনেকদিন ধরেই ছিল। তবে এখন মেয়াদ বাড়িয়েছে। সেটা যেন সঠিকভাবে পরিপালন হয় বা কোনো ধরনের কারসাজিতে ব্যবহার না করে সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে।

সর্বশেষ খবর