সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঢাকায় রাবির জমি ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

ঢাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অতিথি ভবনের জমি ক্রয়ে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ। গতকাল দুপুরে শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক রকীব আহমদের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেন।  আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে শিক্ষক সমাজ। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার কথা জানান তারা। প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ দাবি করছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঢাকায় শুধু জমি ক্রয় করেছে। তারা জমিসহ ফ্ল্যাট   ক্রয় করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জমিসহ ফ্ল্যাট ক্রয় করতে যে ১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা চুক্তির কথা বলছে তা অসঙ্গতিপূর্ণ। দলিলে শুধু জমি ক্রয় বাবদ সাড়ে ৩ কোটি টাকার কথা উল্লেখ আছে বলে দাবি প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চুক্তিপত্রে উল্লেখ আছে জমির দাম ১১ কোটি টাকা। দলিলে উল্লেখ আছে জমির দাম সাড়ে ৩ কোটি টাকা। আবার জমিসহ ফ্ল্যাট ক্রয়ে ১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা চুক্তি করা হয়েছে বলে ব্যাখ্যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। প্রশাসনের এই ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যার কোনো ভিত্তি নেই বলে দাবি শিক্ষক সমাজের। এদিকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সারওয়ার জাহানের দেওয়া বক্তব্যেও দ্বিমত প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের। শিক্ষক সমাজের মতে, ‘ক্রয় কমিটি সভা করে গত বছরের ৩১ আগস্ট দর কষাকষির মাধ্যমে ১৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকার স্থলে জমিসহ ফ্ল্যাটের মূল্য সর্বসাকুল্যে ১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল বলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সারওয়ার রহমান যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামীয় গত ২০ অক্টোবর তারিখের ১৩৩১ নং দলিলের ৬ নং লাইনে রয়েছে অন্য ব্যাখ্যা। সেখানে উল্লেখ আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জমি ক্রয় করার ইচ্ছা প্রকাশ করায় জমির মূল্য ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র ভবনে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের শিক্ষকরা এক জরুরি সভা করেন। সেখানে শিক্ষক সমাজের প্রায় একশ শিক্ষক ক্রয় ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যাখ্যার নিন্দা জানান। প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জমি ক্রয়ে দুর্নীতি করেছে। জমি ক্রয় বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাখ্যা স্পষ্ট নয়। প্রশাসনের এরকম কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

 তাই আমরা প্রশাসনকে আলটিমেটাম দিয়েছি। তারা যদি ১৫ তারিখের মধ্যে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারে তবে আমরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচিতে যাব।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মিজানউদ্দিন বলেন, ‘প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ জমি ক্রয় বিষয়ে কিছু দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবির বিষয়গুলো আমরা ক্রয় কমিটির সঙ্গে আলোচনা করব। জমি ক্রয়ে কোনো দুর্নীতি হয়েছে কি হয়নি তা দ্রুত জানা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।’

সর্বশেষ খবর