সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইউএনও এসি ল্যান্ডের স্বাক্ষর জাল এমপির!

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

সরকারি নিয়ম অনুসারে ইজারা দেওয়া ভূমির বার্ষিক নবায়ন ফি ১২ হাজার টাকা। এ হিসাবে দুই একর ৫২ শতক ভূমির ইজারা নবায়ন ফি আসে ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু এই ৩০ হাজার টাকা না দিয়ে, সরকারি দফতরে না গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ উঠেছে সীতাকুণ্ডের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে। পরিবেশ অধিদফতর, চট্টগ্রাম বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারির জাহানাবাদ এলাকায় এমপি দিদারুল আলমের মালিকানাধীন ‘কদমরসুল স্টিল অ্যান্ড শিপ ব্রেকিং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে, যা শিপ ইয়ার্ড, ২ একর ৫২ শতক জায়গা ইজারা দেওয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুসারে প্রতি বছরই ইজারা নেওয়া ভূমি নবায়ন করতে হয়। কিন্তু ১৪২৩ বাংলা সনের ইজারা নবায়ন না করেই ইয়ার্ডটি নতুন আরেকটি জাহাজ আনতে পরিবেশ ছাড়পত্রের আবেদন করে। কিন্তু আবেদনে দাখিলকৃত তথ্যাদি সম্পর্কে পরিবেশ অধিদফতরের সন্দেহ হলে ১৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে যাচাই-বাছাইপূর্বক প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। উপজেলা প্রশাসন পরদিন এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন দেয় পরিবেশ অধিদফতরকে। এতে বলা হয়, ‘দলিলের চুক্তিতে যে স্বাক্ষর আছে, তার সঙ্গে তৎকালীন সময়ে কর্মরত ইউএনও এবং এসি ল্যান্ডের স্বাক্ষরের মিল নেই।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য দিদারুল আলম বলেন, ‘সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন আমার নির্বাচনী এলাকার। এখানে কোনো কিছুর অনুমোদন নেওয়া আমার জন্য কঠিন কিছু নয়। এ ছাড়া পরিবেশ অধিদফতরে আমি কোনো ছাড়পত্রের আবেদন করিনি। কেউ শক্রতা করে আমার নাম ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে এ কাজ করিয়েছে। ওই অনুলিপি হাতে পেলে আমি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব।’ সীতাকুণ্ড উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘ছাড়পত্র অনুমোদনপত্রে যে তারিখ ব্যবহার করা হয়েছে, ওই সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু সেখানে যে স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে, সেটি আমার নয়। একই সঙ্গে সহকারী কমিশনারের স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা ‘স্বাক্ষর জাল হয়েছে মর্মে’ একটি প্রতিবেদন ১৫ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ অধিদফতরে জমা দিয়েছি।’ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৪ জুন ইয়ার্ডটির অনুমোদন নেওয়া হয় বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়। ওই আবেদনপত্রে যে ইউএনও এবং এসি ল্যান্ডের স্বাক্ষর রয়েছে, তারা তখন কর্মরত ছিলেন না। গত বছর ২৪ জুন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া। কিন্তু স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে শাহীন ইমরানের। এ ছাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছিলেন মাহবুবুল আলম। কিন্তু স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে আবদুল্লাহ আল মামুনের।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর