মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগের বাধায় নিয়োগ পরীক্ষা ভণ্ডুল

শিক্ষকদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগের বাধায় নিয়োগ পরীক্ষা ভণ্ডুল

আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের বাধায় ভণ্ডুল হয়ে গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কর্মকর্তা নিয়োগ পরীক্ষা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল ৪টায় ভিসির বাসভবনে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে— এমন খবর পেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরিবহন মার্কেটের সামনে থেকে মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে মিছিলটি ভিসির বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। তারা দলীয় নেতা-কর্মীদের চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় উপাচার্য ভিতরে অবস্থান করছিলেন। পরে সেখানে প্রার্থীরা এলে পরীক্ষা হবে না জানিয়ে তাদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা।

জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘বহিরাগতরা এসে এখানে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটির সদস্যদের মদদ ছাড়া এটা কোনোভাবে সম্ভব ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কারা তাদের মদদ দিচ্ছে, তা এখন দেখার বিষয়। পরবর্তীতে পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হবে।’

রাবি শিক্ষকদের বাকবিতণ্ডায় : ঢাকায় অতিথি ভবন নির্মাণের জমি কেনার সময় অনিয়ম-দুর্নীতি কীভাবে হয়েছে তা ব্যাখ্যা করার জন্য আহৃত এক সংবাদ সম্মেলন শিক্ষকদের বাকবিতণ্ডা আর ধাক্কাধাক্কির কারণে পণ্ড হয়ে গেছে। গতকাল রাবির প্রশাসন বিরোধী ও প্রশাসনপন্থিদের মধ্যে বিকাল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এ ঘটনা  ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকাল ৩টায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক মো. রকীব আহমদ যখন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করতে যাবেন তখন এর বিরোধিতা করে স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক ফয়জার আহমেদ জানতে চান এখানে কী পাঠ করা হবে। এ সময় উপস্থিত স্টিয়ারিং কমিটির আরও কয়েক সদস্য বলেন তারাও সংবাদ সম্মেলনের বিষয় সম্পর্কে আগে থেকে অবহিত নন। ব্যস, শুরু হয়ে গেল দুই পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় আর ধাক্কাধাক্কি। এরকম পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। অধ্যাপক ড. রকীব আহমদ বলেন, ‘ভবন ক্রয় সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে দুর্নীতির যে অভিযোগ পত্রিকাতে এসেছে আমরা শুধু সেই বিষয়টা জানার জন্য প্রশাসনের কাছে বেশ কয়েকবার গিয়েছি। কিন্তু তারা পরিষ্কার করতে পারেনি। এই বিষয়টি আমরা আজকে সংবাদ সম্মেলনে পারিষ্কার করতে চেয়েছি। কিন্তু প্রশাসন পক্ষের শিক্ষকরা এটা বানচাল করে দিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগও করিনি। আমাদের বিবেকে বেধেছে। সরকার চাইলে ব্যাপারটা তদন্ত করে দেখতে পারে।’ সংবাদ সম্মেলনের বিরোধিতাকারী ও স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন,  ‘সংবাদ সম্মেলনে যা বলা হবে, তা আমাদের কাছে তুলেই ধরা হয়নি। অথচ আমি স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য, এটা দেখার, জানার অধিকার রাখি। তারা আমাদের কাছে প্রকাশই করছে না। আমরা বলছি, আমাদের কাছে পাস করেন, পাস করিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। কিন্তু তা না করেই তারা সংবাদ সম্মেলন করার চেষ্টা করেছেন। অথচ জমি কেনার বেলায় অন্যায় হয়েছে— এরকম কোনো কাগজপত্রও তাদের কাছে নেই।

সর্বশেষ খবর