শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

রংপুরে সাত ছাত্রের চুল কেটে দিলেন স্কুল শিক্ষক

বিচার দাবিতে বিক্ষোভ অভিভাবকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরের কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাত শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দিয়ে তাদের পরীক্ষার কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছেন শরীরচর্চা শিক্ষক নুর মোহাম্মদ। গতকাল দুপুরে মাসিক পরীক্ষা চলার সময় এই ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা শরীরচর্চা শিক্ষকের বিচার দাবিতে কলেজের প্রধান গেটে বিক্ষোভ করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে ঘটনা তদন্তে শিক্ষক মোস্তাফিজুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মাসিক পরীক্ষা চলাকালে চুল বড় রাখার অভিযোগে শরীরচর্চা শিক্ষক নুর মোহাম্মদ শাহজাদা স্টিলের স্কেল দিয়ে সাত শিক্ষার্থীকে পিটুনি দেওয়ার পর নিজেই কাঁচি দিয়ে তাদের মাথার চুল কেটে দেন। সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিন হাসান মানিক জানায়, ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা চলাকালে কক্ষ পরিদর্শক শরীরচর্চা শিক্ষক নুর মোহাম্মদ শাহজাদা আমার কাছে আসেন। চুল কেন বড় রেখেছিস? বলেই তিনি আমাকে স্টিলের স্কেল দিয়ে পেটান। পরে কাঁচি দিয়ে আমার মাথার কয়েক জায়গার চুল কেটে দিয়ে আমাকে পরীক্ষার কক্ষ থেকে বের করে দেন। আমি ক্ষমা চাইলেও তিনি আমাকে আর পরীক্ষা দিতে দেননি। একইভাবে আরও যাদের চুল কেটে দেওয়া হয় তারা হলো—অষ্টম শ্রেণির শরিফুল ইসলাম, সপ্তম শ্রেণির আনোয়ারুল ইসলাম, মিনহাজুল ইসলাম, রাকিব হাসান রাশেদ, সাজিদ হাসান ও মনিরুল ইসলাম। শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম জানায়, স্কুলের নিয়মমতো মাথার চুল রেখেছি। তবুও নুর মোহাম্মদ স্যার আমাদের পিটুনি দিয়ে মাথার চুল কেটে দিয়েছেন। শিক্ষার্থী মাহিন হাসান মানিকের বড়ভাই হালিম মিয়া অভিযোগ করেন, স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী মানিকের মাথার চুল ছাঁটা হয়। তা সত্ত্বেও অন্যায়ভাবে তার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে। আমি চুল কেটে দেওয়া শিক্ষকের বিচার চাই।  এর আগেও আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠান প্রধান তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম বলেন, শিক্ষক নুর মোহাম্মদ কাজটি ঠিক করেননি। শিক্ষার্থীরাও অভিযোগ করেনি। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আবদুল ওয়াহেদ মিঞা বলেন, ঘটনার সময় তিনি কলেজের বাইরে ছিলেন। বিষয়টি দুঃখজনক। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত শিক্ষক নুর মোহাম্মদ শাহজাদার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী জানান, তিনি বাইরে আছেন।

সর্বশেষ খবর