সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
জাতীয় প্রেস ক্লাব সংলাপে বক্তারা

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দুই দেশের সমমর্যাদা তৈরি হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দুই দেশের সমমর্যাদা তৈরি হয়েছে

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর শীর্ষক জাতীয় প্রেস ক্লাব সংলাপে অতিথিরা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর শীর্ষক জাতীয় প্রেস ক্লাব সংলাপে বক্তারা বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক, আবেগ ও রক্তের। এই সম্পর্ক যত গভীর হবে, বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের উন্নয়নও তত বেগবান হবে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দুই দেশের সম্পর্কের অনেক অগ্রগতি হয়েছে, একে আরও এগিয়ে নিতে হবে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে গতকাল অনুষ্ঠিত সংলাপে বক্তারা এ কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সেমিনার উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশিদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান, সৈয়দ শফিউল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, সহ-সভাপতি সাইফুল আলম, আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান প্রমুখ। শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের মধ্য দিয়ে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসে নতুন মাত্রার সূচনা হয়েছে। দুই দেশের সমমর্যাদা তৈরি হয়েছে। ভারতের সঙ্গে সমানে সমানে থেকেই আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনাগুলো আদায় করে নেব। অতীতে যেমন নিয়েছি, আগামী দিনগুলোতেও নেব। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রটোকল ভেঙে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে কেবল স্বাগতই জানাননি, তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেকক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে এগিয়ে গেছে। তিনি বলেন, সেদেশের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বলেছেন, তার রাজনৈতিক জীবনে দেখা সময়ের মধ্যে বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এসব বক্তব্য বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক বিষয়ে বিভিন্ন মহলের বিরোধিতার জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে বলব, কেবল ভারত নয় যে কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তিকে রাজনৈতিক ইস্যু বানাবেন না। এতে নিজ দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা বিষয়ক চুক্তি ও সমঝোতা প্রসঙ্গে আবদুর রশিদ বলেন, দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে অনেক সহযোগিতাই আগে থেকেই চলমান। চুক্তির মাধ্যমে একে একটি ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে আনা হয়েছে মাত্র। এই চুক্তির মধ্যে এমন কোনো শর্ত দেখিনি যে আমাদের সেনাবাহিনী কোথায় মোতায়েন হবে—সে বিষয়ে ভারতের মতামত নিতে হবে। এগুলো না দেখেই যারা সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন তুলছেন—তাদের জ্ঞানের কিছুটা স্বল্পতা রয়েছে। ওয়ালিউর রহমান বলেন, ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা কিছু করেছেন, তার সবটাই জাতীয় স্বার্থে করেছেন। জাতীয় স্বার্থের বাইরে তিনি কিছুই করেননি। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের যে নিরবচ্ছিন্নতা—সেটিও তৈরি করেছেন শেখ হাসিনা। তারেক শামসুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ২০৫০ সালে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশে পরিণত হবে। ভারতের বিশাল অর্থনীতি থেকে আমরা লাভবান হতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর সফরে সেটি এগিয়েছে। সহযোগিতার দ্বারকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। সোহরাব হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরে অনেক প্রাপ্তি, পূর্ণতা ও সফলতা যেমন আছে, তেমনি একটি অপূর্ণতাও আছে। অপূর্ণতা হচ্ছে, তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যে চুক্তির আলোচনা হচ্ছিল, সেটি এবারও হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তার সরকারের সময়ই এই চুক্তি হবে। আমরাও আশা করি, এই ঘোষণার বাস্তবায়ন হবে। ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর ঐতিহাসিক। এ সফরের মধ্যদিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। তিনি বলেন, তিস্তার পানি চুক্তি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেই এটি জয় করা সম্ভব হবে। মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক যেমন ঐতিহাসিক, তেমনি রক্তের। এদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতের সেনাবাহিনীর রক্ত এক হয়ে আমাদের সম্পর্ক অটুট হয়েছে। আজও সেই সম্পর্ক অটুট আছে।

সর্বশেষ খবর