বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

গরমের শুরুতেই খুলনায় চরম পানি সংকট

টাকা দিয়েও মিলছে না

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

গরমের শুরুতেই খুলনা মহানগরীজুড়ে চরম পানি সংকট দেখা দিয়েছে। পানসহ নিত্যব্যবহার্য কাজে পানি পাচ্ছে না নগরবাসী। বাসাবাড়িতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় গভীর নলকূপ থেকেও পানি উঠছে না। পানির জন্য ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দুই সপ্তাহ ধরে চলছে এ অবস্থা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, মনুষ্যসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ই বর্তমান পানি সংকটের অন্যতম কারণ। এখনই সচেতন না হলে ভবিষ্যতে এ অবস্থা আরও চরম আকার ধারণ করবে। অবশ্য ওয়াসা বলছে, ২০১৮ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পানির সংকট থাকবে না।

জানা যায়, মহানগরীর প্রায় ১৬ লাখ মানুষের জন্য প্রতিদিন ২৪ কোটি লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। সেখানে পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াসা প্রতিদিন সরবরাহ করছে মাত্র ১৩ কোটি লিটার। ফলে নগরীর অর্ধেক বাসিন্দাই ওয়াসার পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নগরীর কেডিএ এভিনিউর বাসিন্দা শাহ আনিসুর রহমান জানান, পানির জন্য তার পরিবারের সদস্যরা গত দুই দিন গোসল পর্যন্ত করতে পারেননি। তিনি বলেন, সারা দিন মোটরে পানি ওঠে না। শেষ রাতের দিকে টিমটিম করে পানি এলেও অল্প সময় পরেই তা বন্ধ হয়ে যায়। সমাজসেবী শেখ মো. আজিজুর রহমান বলেন, পানির অভাবে কয়েকজন মিলে তিন দিন আগে ৫০০ টাকায় ওয়াসার ৩ হাজার লিটারের পানির ট্যাংক এনে চাহিদা মেটালেও এখন তাও পাওয়া যাচ্ছে না। বাসাবাড়িতে কাজ করা মহিলাদের অনেক অনুরোধ করে প্রতি কলস পানি ১০ থেকে ২০ টাকা করে দিয়ে আনতে হচ্ছে। বেসরকারি সংস্থা অ্যাওসেড ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, খুলনা সিটি করপোরেশনের ১, ৬, ৭, ১০, ১১, ১২, ১৪, ১৫, ১৭, ১৯, ২১, ২৩ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় পানির স্তর গড়ে ২৭ থেকে ৩০ ফুট নিচে নেমে গেছে। এসব এলাকার গভীর নলকূপে পানি না ওঠায় বাসিন্দারা চরম বিপাকে পড়েছেন।

অ্যাওসেডের নির্বাহী পরিচালক শামীম আরফিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, খুলনায় হঠাৎ করেই অনুমতি ছাড়াই ‘সাবমার্সিবল ওয়াটার পাম্প’ দিয়ে মাটির গভীর থেকে পানি উত্তোলনের প্রবণতা বেড়েছে। অসংখ্য পুকুর, খাল, দিঘি ভরাট করে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে মাটির পানির ধারণক্ষমতা কমেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর