বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

জনি হত্যায় মামলা গ্রেফতার ২১ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

জনি হত্যায় মামলা গ্রেফতার ২১ জন

যুবদল নেতা মোহাম্মদ জনি ওরফে বাবা জনি হত্যাকাণ্ডে ২১ জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। হত্যা রহস্য উদঘাটনের স্বার্থে গতকালই তাদের জিজ্ঞসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এর আগে নিহতের স্ত্রী মর্জিনা বেগমের দায়ের করা মামলায় সন্দেহভাজন ৫২ জনের মধ্যে পুলিশ ২১ জনকে গ্রেফতার দেখায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাদী এজাহারে কোনো আসামির নাম উল্লেখ করেননি। তবে ২১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কয়েকটি কারণ সামনে রেখে এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।

এদিকে অজ্ঞাতনামা ২০-২২ জন আসামির কথা উল্লেখ করে মর্জিনা বেগম এজাহারে বলেছেন, তার স্বামী জনি একজন পাইকারি ফুল ব্যবসায়ী ছিলেন। সাভার থেকে ফুল এনে শাহবাগে ফুল মার্কেটে বিক্রি করতেন। রবিবার রাতে জনি তাকে ফোনে জানায়, তিনি সাকুরা বারে যাচ্ছেন। রাতেই তার বাসায় ফেরার কথা ছিল। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তার স্বামীর বন্ধু স্বপন তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলে। তিনি দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে তার স্বামীর লাশ পান। মর্জিনা বেগম বলেন, জনিকে সাকুরা বারে থাকা অবস্থায় ২০-২২ জন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে সাকুরা বারের লোকজনের পাশাপাশি যুব দলের নেতাদের হাত রয়েছে।

গতকাল জনি সম্পর্কে শাহবাগ ফুলের মার্কেট ও পরীবাগ এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জনি শাহবাগে পাইকারি ফুলের ব্যবসার পাশাপাশি ঢাকার ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তিনি ওই ওয়ার্ডে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। শাহবাগ এলাকায় চাঁদাবাজিসহ দুটি হত্যা মামলার আসামি জনি। এর মধ্যে ২০১২ সালে পরীবাগ এলাকায় বিএনপির সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর খাজা হাবিবের গাড়ি চালক ও বিএনপি নেতা সেলিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন জনি। যদিও ওই মামলায় বর্তমানে জামিনে ছিলেন তিনি। এ ছাড়া ঢাকার বাইরের একটি হত্যা মামলাতেও জনির সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। চাঁদাবাজি ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে জনির নিজস্ব একটি বাহিনী রয়েছে। পরীবাগ, শাহবাগসহ আশপাশ এলাকার বিএনপি-যুবদলের নেতাদের অনেকের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এর আগে সেলিমকেও পরীবাগে সাকুরা বারের পাশেই রাস্তায় হত্যা করা হয়। পাঁচ বছর পর ঠিক একই এলাকাতেই খুন হলেন জনি।

এ বিষয়ে মহানগর দক্ষিণ ও শাহবাগ থানা বিএনপি নেতা আবদুল হান্নান গতকাল বিকালে বলেন, জনি যুবদলের সক্রিয় নেতা ছিল না। দলে তার তেমন অবস্থানও নেই। তাকে কী কারণে বা কেন হত্যা করা হয়েছে এ ব্যাপারে তার তেমন কোনো ধারণা নেই।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাতে জনিকে মারতে মারতে সাকুরা বার থেকে নিচে নামাতে দেখেছেন স্থানীয় অনেকেই। এরপর তাকে সাকুরা বারের পার্শ্ববর্তী নিউ ভাই ভাই হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের সামনে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সম্পর্কে ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজন কিছু বলতে পারেনি। সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সাকুরা বার থেকে মারতে মারতে একজনকে (জনি) নিচে নামানোর পর রাস্তায় তাকে ব্যাপকভাবে পিটানো হয়। পরে জানতে পারেন ওই লোকটি মারা গেছে।

সর্বশেষ খবর