বুধবার, ৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

শর্ত মেনেই নিতে হবে স্মার্টকার্ড

মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেবে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্মার্টকার্ড নিতে নাগরিকদের দশ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের কনীনিকার প্রতিচ্ছবি (আইরিশ) বাদ দেওয়ার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিদ্যমান পদ্ধতিতেই স্মার্টকার্ড বিতরণ চলবে বলে গতকাল কমিশন সভায় জানিয়েছে   সাংবিধানিক সংস্থাটি। এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ শেষ না হলেও প্রয়োজনে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রস্তাব দেবে ইসি।

ইসি ও ফ্রান্সের একটি সংস্থার সঙ্গে ডিসেম্বরের মধ্যে ৯ কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি রয়েছে। নানা জটিলতায় এ কাজে স্থবিরতা আসায় বিকল্প প্রস্তাব দেয় ইসি সচিবালয়। এ পরিস্থিতিতে স্মার্টকার্ড বিতরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগারগাঁওয়ের ‘নির্বাচন ভবনে’ গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসে ইসি। বিকালে বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে নিজ কার্যালয়ে ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, এখন যে পদ্ধতিতে স্মার্টকার্ড দেওয়া হচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে অর্থাৎ স্মার্টকার্ড নিতে আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশ লাগছেই। ইসি সচিবালয় ও এনআইডি উইং তা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সার্বিক এ প্রস্তাবটি রাখেনি ইসি। বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনের পর রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা একই পদ্ধতিতে স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করেছেন। এ দুটো ফিচার নেওয়া হলে ব্যক্তির সঠিকতা যাচাই আরও সুনিশ্চিত থাকে। গোয়েন্দা দফতর এ দুটো ফিচার রাখার পক্ষে। সব মতামত পর্যালোচনা করে আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশ বাদ দিতে চাইছে না কমিশন। আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহেন্সিং অ্যাকসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা।

ইসি সচিব জানান, এই সময়ের মধ্যে ৯ কোটি নাগরিককে স্মার্টকার্ড দিতে না পারলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক দফা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, নির্ধারিত সময়ে এ কাজ সারতে কারিগরি কাজ বাড়ানো হবে। তা না হলে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বলা হবে। স্মার্টকার্ড কার্যক্রম কখনো বন্ধ হওয়ার নয়। এজন্য পরবর্তীতে সরকারি অর্থায়নে বিতরণ কাজ চলবে। নাগরিকদের ‘স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র’ দিতে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ফ্রান্সের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে ইসি। প্রকল্পের মেয়াদের দুই তৃতীয়াংশ সময় পরও স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু করতে না পেরে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয় আরও দেড় বছর। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হলেও মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকায় ১৫ লাখ, কুড়িগ্রামে ৮২ হাজার, চট্টগ্রামে ৪৭ হাজার ও রাজশাহীতে ৯ হাজার কার্ড বিতরণ হয়েছে। রাজধানীতেই এ পর্যন্ত ৪০ শতাংশ নাগরিক স্মার্টকার্ড নেননি, নানা জটিলতায় ১ লাখেরও বেশি লোক কার্ড নিতে পারেননি।

সর্বশেষ খবর