রবিবার, ৭ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

চবিতে সংঘর্ষের নেপথ্যে ছাত্রলীগের বাণিজ্য

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

চবিতে সংঘর্ষের নেপথ্যে ছাত্রলীগের বাণিজ্য

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) হানাহানি-খুনোখুনির পেছনে ছাত্রলীগের একাধিক পক্ষের টেন্ডার বাণিজ্য ও ভাগ-বাটোয়ারাই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন অন্য নেতারা। তাই বছর না ঘুরতেই চবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। গতবছরের জুলাই মাসে চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর ৯৩ কোটি টাকার একটি টেন্ডার নিয়ে সংঘর্ষ বাধে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে। সেই থেকে প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ৮ বার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপের মধ্যে। চলতি বছরের এপ্রিলে তিনটি প্রকল্পের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ৫১ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করে। এই দরপত্র নিয়েও শুরু হয় নতুন করে হিসাব-নিকাশ। এই হিসাব-নিকাশ আড়ালে রেখে শুরু হয় নতুন করে কোন্দল। ফলে এই কোন্দল থেকেই চবি ক্যাম্পাসে আবারও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এদিকে গত বৃহস্পতিবারের ঘটনায় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সাতজন আহত হলে শুক্রবার ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ কমিটি স্থগিত করতে বাধ্য হয়। মূলত চবি ছাত্রলীগের দুই অংশের একটি নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর এবং অপর অংশ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছে তাদের কার্যক্রম। সর্বশেষ এই দুই পক্ষের মহিউদ্দিন অংশের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন সদ্য স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজন এবং নাছির অংশের নেতৃত্বে স্থগিত কমিটির সভাপতি মো. আলমগীর টিপু। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল না থাকলেও তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে গত তিন বছরে একাধিক খুন ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় বলে দাবি করেছেন চবি ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতা। এর মূলে টেন্ডারের ভাগ-বাটোয়ারা ও অবৈধ আর্থিক লেনদেনই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন চবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।

এদিকে বর্তমান নেতারা সাবেক নেতাদের এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন জানিয়ে স্থগিত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু বলেন, টেন্ডার বা অনৈতিক লেনদেনের সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত নেই। মূলত অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা এই সংঘর্ষের ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। তারাই ঠুনকো বিষয়কেও গ্রুপিংয়ে নিয়ে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। এদের চিহ্নিত করে কমিটি থেকে বহিষ্কারের উদ্যোগ নিতে তিনি কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সর্বশেষ খবর