সোমবার, ২২ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের ইন্তেকাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের ইন্তেকাল

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক দল জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল সকাল সোয়া ৭টার দিকে রাজধানীর আসাদ গেটের নিজ বাসভবনে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি স্ত্রী রেহেনা প্রধান, এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গত দুই দিন ধরে প্রধান জ্বরে ভুগছিলেন। এর আগে একাধিকবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সা নিয়েছিলেন। রেহেনা প্রধানও গুরুতর অসুস্থ। এদিকে শফিউল আলম প্রধানের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীকসহ ২০ দলের নেতারা। জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুত্ফর রহমান, আবু মোজাফফর মো. আনাছ, আসাদুর রহমান খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সকাল থেকেই মরহুম প্রধানের মরদেহের পাশে অবস্থান নিয়ে সার্বিক বিষয় দেখভাল করছেন। একইভাবে পঞ্চগড়ে জন্মস্থান হওয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা ফরহাদ হোসেন আজাদ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখেন। প্রধানের মৃত্যুর খবর শুনেই তারা ছুটে যান বাসায়। এদিকে তার মৃত্যুর সংবাদে তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুরে নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে যায়। গতকাল বাদ জোহর আসাদ গেট দলীয় কার্যালয়ের সামনে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকায় প্রথম জানাজা শেষে অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নিয়ে রওনা হয় পঞ্চগড়ের উদ্দেশে। দিনাজপুরে ইনস্টিটিউট মাঠে রাত সাড়ে ৮টার দিকে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরহুমের জন্মস্থান পঞ্চগড় শহরের চিনিরকল ময়দানে তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় রাত ১১টায়। সেখানে নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। আজ বাদ আসর বায়তুল মোকারম জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে চতুর্থ নামাজের জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে। শফিউল আলম প্রধানের মৃত্যুর সংবাদ শুনে তার বাসায় ছুটে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ, বিলকিস জাহান শিরীন, এ্যালবার্ট পি কস্তা, নাজিম উদ্দিন আলম, আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতল্লাহ, জোট নেতা খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, রকিবউদ্দিন চৌধুরী, সাইফুদ্দিন মনি, গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া প্রমুখ। শফিউল আলম প্রধানের জন্ম ১৯৫০ সালে পঞ্চগড়ে। পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার তমিজউদ্দিন ছিলেন তার বাবা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে লেখাপড়া করা প্রধান ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭৩-৭৪ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শফিউল আলম প্রধান। ১৯৭৪ সালের এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুহসীন হলে সাত ছাত্রকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আসামি হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়েন। সে সময় কারাগারে যেতে হলেও পরে জিয়াউর রহমানের সময় মুক্তি পান। ১৯৮০ সালের ৬ এপ্রিল রমনা গ্রিনে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি গঠন করে তার সভাপতি হন শফিউল আলম প্রধান।

সর্বশেষ খবর