শুক্রবার, ২৬ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

দাবদাহ অব্যাহত প্রাণ ওষ্ঠাগত

গাজীপুরে চার শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীসহ সারা দেশেই চলছে তীব্র দাবদাহ। ভ্যাপসা গরম আর শুষ্ক আবহাওয়ায় প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা। তবে এর মধ্যে রাজশাহী, সিলেট ও রংপুর অঞ্চলে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। এই দাবদাহ আগামী দুই দিন চলতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এদিকে, গাজীপুরে প্রচণ্ড দাবদাহে কোনাবাড়ীর কাশিমপুর শিল্প এলাকার ১০টি পোশাক কারখানার চার শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আবহাওয়াবিদ আবদুল আলীম বলেন, গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনায় ৩৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রংপুরের রাজারহাটে। সারা দেশের আবহাওয়া সারা দিন শুষ্কই ছিল। তবে বিকালের দিকে রাজশাহী, সিলেট ও রংপুরে ৪-৫ মিলিমিটার পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে। ফলে অন্য জায়গার তুলনায় এই এলাকার আবহাওয়া একটু শীতল। তবে আগামী দুই দিন রাজধানীর আবহাওয়া এ রকম শুষ্ক থাকবে। আজ রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুরে বৃষ্টি হতে পারে। তীব্র গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজধানীর জীবনযাত্রা। সবচেয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছে শ্রমজীবী মানুষ। সকাল গড়িয়ে দুপুর নামতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজধানী। এই গরমে একটু কাজ করলেই হাঁপিয়ে যেতে হয় তাদের। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে সূর্যের তাপও। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা। এজন্য যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় সকাল ১০টায় ক্লাস শুরু হতো সেখানে ৭টা থেকেই শুরু হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা হৃদরোগে আক্রান্তদের বাড়িয়ে দিচ্ছে ঝুঁকি। এ ব্যাপারে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আফজালুর রহমান বলেন, গরম বেশি পড়ায় হিটস্ট্রোক বাড়ছে। এই তীব্র গরমে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে হৃদরোগে আক্রান্তদের জীবন। তীব্র গরমে সংকটে পড়েছেন কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা। অল্প সময়েই পচে যাচ্ছে সবজি। এদিকে,  পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে ভয়াবহ লোডশেডিং। ফলে সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমিক, অফিসগামী মানুষ, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, ছোট ছোট বাচ্চা শিশু ও বয়ঃবৃদ্ধরা তীব্র দাবদাহে নাকাল হয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর— গাজীপুর : গাজীপুরে প্রচণ্ড দাবদাহে কোনাবাড়ীর কাশিমপুর শিল্প এলাকার অন্তত ১০টি পোশাক কারখানার চার শতাধিক শ্রমিক গতকাল অসুস্থ হয়েছেন। এ ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকার অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে এক সপ্তাহ ধরে এ পরিস্থিতির কারণে ওই এলাকার সব পোশাক কারখানার উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পোশাক রপ্তানি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কারখানার মালিকরা। শরীয়তপুর : শরীয়তপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। দিনরাত মিলিয়ে ২-৩ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছে না গ্রাহক। সাধারণ মানুষ অস্থির হয়ে পড়ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, কল কারখানার উৎপাদন স্থবির হয়ে রয়েছে। বিপর্যয় কাটিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরও তিন-চার মাস লাগবে বলে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে। কুষ্টিয়া : বিদ্যুতের অভাবে বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরে চাল উৎপাদনে ধস নেমেছে। উৎপাদনের ভরা মৌসুমে মুখ থুবড়ে পড়েছে উৎপাদন। লোডশেডিংয়ের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মিল বন্ধ থাকায় চাল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। ক্রমবর্ধমান চালের বাজারে এর মারাত্মক প্রভাবের আশঙ্কা করছেন চালকল মালিকরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর