বুধবার, ৩১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

আরএমপির চার কোটি টাকার দরপত্র নিয়ে লুকোচুরি

পছন্দের লোককে কাজ পাইয়ে দেওয়াই লক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) প্রায় চার কোটি টাকার দরপত্র নিয়ে লুকোচুরির অভিযোগ তুলেছেন ঠিকাদাররা। তাদের অভিযোগ, দরপত্র আহ্বানের পর থেকেই কর্তৃপক্ষ লুকোচুরি করছেন, যাতে ‘পছন্দের’ বাইরের কেউ দরপত্র জমা দিতে না পারেন। ঠিকাদাররা বলছেন, আরএমপির বার্ষিক এই দরপত্রের সিডিউল ঠিকাদারদের কাছে সরবরাহ করা হয়নি। মঙ্গলবার বেলা ২টায় সিডিউল সংগ্রহ করার সময়ও শেষ হয়েছে। বুধবার দরপত্র জমা দেবেন ঠিকাদাররা। কিন্তু সব ঠিকাদারকে সিডিউল না দেওয়ায় অনেকেই দরপত্রে অংশগ্রহণের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারছেন না। ঠিকাদারদের অভিযোগ, পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতে আরএমপির সদর দফতরের কিছু লোক বণ্টনের বেলায় ছলচাতুরি করেছে। শুধু তাই নয়, দরপত্র প্রক্রিয়া গোপন রাখতে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় এর কোনো বিজ্ঞাপনও ছাপানো হয়নি। আরএমপির সদর দফতরে গিয়ে দেখা যায়, নোটিস বোর্ডেও দরপত্রের কোনো নোটিস টাঙানো হয়নি। গোলাম কিবরিয়া ও শফিউর রহমান নামে দুজন ঠিকাদার অভিযোগ করেন, সিডিউল কিনতে গত সোমবার দুপুরে তারা আবদুল্লাহ নামে এক ব্যক্তিকে আরএমপির প্রশাসনিক কর্মকর্তার দফতরে পাঠান। কিন্তু প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুল লতিফ তাকে জানান, সিডিউল সরবরাহ করার জন্য এখনো প্রস্তুত করা যায়নি। পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে তারা নিজেরাই সিডিউল নিতে যান। কিন্তু প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাদের জানান, সিডিউল বিক্রির সময় শেষ হয়ে গেছে।

এ দুই ঠিকাদারের দাবি, সিডিউল সরবরাহের সময় যতক্ষণ ছিল, ততক্ষণ প্রশাসনিক কর্মকর্তা তার নিজের দফতরে ছিলেন না। সময় শেষ হওয়ার পর তিনি নিজের অফিসে যান। কার্যাদেশ দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে পছন্দের ঠিকাদারদের সঙ্গে চুক্তি হয়ে গেছে পুলিশের। সে জন্য এমন লুকোচুরি। এই দুই ঠিকাদার অন্য বেশ কয়েকজন ঠিকাদারের নাম উল্লেখ করে দাবি করেন, আরএমপির কার্যাদেশ তারাই পাবেন। কারণ, তারা পুলিশকে ‘খুশি’ করে এবং পছন্দের লোক হয়েছেন।

জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য পুলিশের স্টোরের মালামাল সরবরাহ, স্টেশনারি সামগ্রী, মোটরযানের যন্ত্রাংশ মেরামত ও সরবরাহ, শুকনো খাবার, ওষুধ ও পোশাক সরবরাহ এবং ধোলাইয়ের জন্য গত ৮ মে এই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ৯টি লটের এসব দরপত্রের সর্বনিম্ন মূল্য হবে প্রায় চার কোটি টাকা। এক একটি সিডিউলের মূল্য ৪০০ থেকে এক হাজার টাকা। আর দরপত্রের জামানতই দিতে হবে পাঁচ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। জানতে চাইলে আরএমপির প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুল লতিফ দাবি করেন, সিডিউল সরবরাহে কোনো লুকোচুরি করা হয়নি। নোটিস বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি না টাঙানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এটা টাঙাতে ভুলে গেছি।’

সর্বশেষ খবর