বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজধানীতে পানির জন্য হাহাকার

ওয়াসার পানি কিনতে হচ্ছে দ্বিগুণ দামে

মোস্তফা কাজল

দাবদাহ ও লোডশেডিংয়ের কারণে রাজধানীতে দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সংকট। অনেকে বলছেন, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরম ও রমজানের কারণে পানির চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু পানির সরবরাহ বাড়েনি। বরং কমেছে। অনেক এলাকায় রান্না, ধোয়ামোছাসহ জরুরি কাজ করা যাচ্ছে না। কোনো কোনো এলাকায় মসজিদেও পানির সংকট তৈরি হয়েছে। মুসল্লিরা অজু করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। পানির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও পাম্প ঘেরাও করছে বিক্ষুব্ধ মানুষ।

রাজধানীর উত্তরা, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, রামপুরা, মুগদা, মাদারটেক, মানিকনগর, মাণ্ডা, যাত্রাবাড়ী, নয়াপল্টন, রাজারবাগ, শান্তিনগর, মগবাজার, চামেলীবাগ, টিকাটুলি, হাজারীবাগ, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, কলাবাগান, বাড্ডা, কুড়িল, শাহজাদপুর, পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোড, সতীশ সরকার লেন, মুরগিটোলা, মীরহাজীরবাগ, জুরাইন, পোস্তগোলা, সুরিটোলা, শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় এক মাস ধরে চলছে তীব্র পানি সংকট।

এ সুযোগে ওয়াসার একশ্রেণির অসাধু কর্মচারী পানি বাণিজ্যে নেমেছেন। এক গাড়ি পানির দাম ৫০০ টাকা হলেও এক হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে কোনো কোনো এলাকায়। পানি না পেয়ে অনেকে বোতলজাত পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। উপায় না পেয়ে কেউ কেউ ধানমন্ডি লেক ও হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন পুকুরে গোসল করছেন। পানির এমন সংকটের কারণে রাজধানীবাসীর অসন্তোষ বাড়ছে।

অন্যদিকে অনেক এলাকায় দিনে দু-একবার পানি সরবরাহ হলেও তাতে দুর্গন্ধ ও ময়লা থাকায় পান করা যাচ্ছে না। পানির এমন পরিস্থিতিতে অনেকে ডায়রিয়া ও পেটের পীড়ায় ভুগছেন। পানি নিয়ে এমন নাকাল অবস্থা বিরাজ করলেও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেছেন, চাহিদার তুলনায় বর্তমান সরবরাহ বেশি। রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা ২৩০ কোটি লিটার। কিন্তু উৎপাদন সক্ষমতা ২৪৫ কোটি লিটার। লোডশেডিং, জেনারেটরের অকার্যকারিতা এবং পানির স্তর নেমে গেলে কখনো কখনো অবশ্য উৎপাদন কমে। তবে বর্তমানে উৎপাদন চাহিদার তুলনায় বেশি। যেসব এলাকায় সংকট সেখানে সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা আছে। তাই পানি যাচ্ছে না। তবে আমরা গাড়িতে পানি সরবরাহ করে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছি। তিনি এই সমস্যাকে ‘সাময়িক’ বলে মন্তব্য করেন।

ঢাকা ওয়াসা সূত্র জানায়, রাজধানীতে চাহিদার ৭৮ শতাংশ পানি ভূগর্ভস্থ। বাকি ২২ শতাংশ পানি রাজধানীর পাশের বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদী থেকে সংগ্রহ শেষে শোধন করে সরবরাহ হয়। সায়েদাবাদ-১, সায়েদাবাদ-২ ও চাঁদনীঘাটে তিনটি শোধনাগার এবং ৭৩০টি গভীর নলকূপই  নগরবাসীর পানির উৎস।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর