সোমবার, ৫ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

হারিয়ে যাচ্ছে কবিতা উপন্যাসের নদ-নদী

বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ

জয়শ্রী ভাদুড়ী

আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে—এই বাংলায়; হয়তো মানুষ নয়—হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে। কবি জীবনানন্দ দাশের সেই ধানসিঁড়ি নদী তার রং রূপ জৌলুস হারিয়ে এখন মৃতপ্রায়। শুধু ধানসিঁড়ি নয়, মাইকেল মধুসূদন দত্তের খরস্রোতা কপোতাক্ষ নদে এখন আর ঢেউ খেলে না। অদ্বৈত মল্লবর্মণের তিতাস নদী আর ভাটিয়ালি গানের সর্বনাশা পদ্মার গতিপথ ক্ষীণ হয়ে পরিণত হয়েছে সরু নালায়। দখল, দূষণ আর নদীগর্ভে পলি জমে মরে যাচ্ছে নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদ-নদী। নদী তার পানি আর ইতিহাস হারিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে পানি জাদুঘরে। এ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ‘আমি প্রকৃতির প্রকৃতি আমার’ স্লোগান নিয়ে আজ সারা দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। একটা সময় জালের মতো ছড়িয়ে থাকা ১২০০ নদ-নদীর কারণে নাম হয়েছিল নদীমাতৃক বাংলাদেশ। কিন্তু দখল, দূষণ, আর নদী শাসনের কারণে কমতে কমতে তার সংখ্যা অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে। নদী এখন ইতিহাস। নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল সভ্যতা। কিন্তু এখন সভ্যতার চাপকলে গতিরুদ্ধ হচ্ছে নদীর। নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে কল-কারখানা, বাড়িঘর। আর শহরের বর্জ্য ফেলার জন্য হাজারো নালা গিয়ে পড়েছে নদীগর্ভে। রাজধানী ঢাকার বর্জ্যে বিষাক্ত হয়ে গেছে বুড়িগঙ্গা। আর এখন বুড়িগঙ্গার বিষ ছড়িয়ে পড়ছে পদ্মা, মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ, গোমতী, ধলেশ্বরী আর শীতলক্ষ্যায়। বুড়িগঙ্গার পাশ দিয়ে গড়ে ওঠা কল-কারখানার বর্জ্য আর অবৈধ ক্ষীণ হয়ে পরিণত হয়েছে সরু নালায়। দখল, দূষণ আর নদীগর্ভে পলি জমে মরে যাচ্ছে নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদ-নদী। নদী তার পানি আর ইতিহাস হারিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে পানি জাদুঘরে। এ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ‘আমি প্রকৃতির প্রকৃতি আমার’ স্লোগান নিয়ে আজ সারা দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। একটা সময় জালের মতো ছড়িয়ে থাকা ১২০০ নদ-নদীর কারণে নাম হয়েছিল নদীমাতৃক বাংলাদেশ। কিন্তু দখল, দূষণ, আর নদী শাসনের কারণে কমতে কমতে তার সংখ্যা অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে। নদী এখন ইতিহাস। নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল সভ্যতা। কিন্তু এখন সভ্যতার চাপকলে গতিরুদ্ধ হচ্ছে নদীর। নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে কল-কারখানা, বাড়িঘর। আর শহরের বর্জ্য ফেলার জন্য হাজারো নালা গিয়ে পড়েছে নদীগর্ভে। রাজধানী ঢাকার বর্জ্যে বিষাক্ত হয়ে গেছে বুড়িগঙ্গা। আর এখন বুড়িগঙ্গার বিষ ছড়িয়ে পড়ছে পদ্মা, মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ, গোমতী, ধলেশ্বরী আর শীতলক্ষ্যায়। বুড়িগঙ্গার পাশ দিয়ে গড়ে ওঠা কল-কারখানার বর্জ্য আর অবৈধ দখলে মরতে বসেছে বুড়িগঙ্গা। এত পরিমাণ বিষাক্ত যে বুড়িগঙ্গার পানি পরিশোধন করে ঢাকা শহরে সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নঈম গওহর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নদী আমরাই শেষ করেছি। নদীকে বস্তু মনে না করে জীবন্ত এবং দামি মনে করতে হবে। নদীকে ভাবা হয় ভোগের সামগ্রী হিসেবে। যার নদ-নদী দখল করার ক্ষমতা আছে সে দখল করছে, যার ময়লা ফেলার ক্ষমতা আছে সে ময়লা ফেলছে। আবার ইচ্ছামতো বালুও তুলে নিচ্ছে। নদী তার প্রয়োজনীয় পানিটুকু নিয়ে সাগরে পৌঁছাবে; এটা তার অধিকার। নদীর প্রতি আন্তরিক না হলে নদী বাঁচবে না। ফারাক্কার প্রভাবে শুকিয়ে সরু হয়ে গেছে পদ্মা নদীর গতিপথ। পানি পরিমাণ মতো না এলেও প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বর্জ্য টেনে নিয়ে আসে পদ্মা। আর এর ফলে গ্রীষ্ম মৌসুমে পদ্মার বুকের ওপর দিয়ে হেঁটে এপার থেকে ওপার যাওয়া যায়। যমুনা বর্ষাকালে দুকূল ভাসালেও গ্রীষ্ম আসতে না আসতেই বঙ্গবন্ধু সেতুর নিচে জেগে ওঠে বিশাল বালুচর। মধুমতি, চিত্রা, গড়াই, করতোয়া, বাঙালি, ইছামতি, বালু, ভৈরব, তুরাগসহ প্রায় সব নদীই চলে যাচ্ছে নিঃশেষের দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু এসব দখলবাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সেরকম তোড়জোড় দেখা যায় না। ক্ষমতার জোরে নদ-নদী দখল এবং দূষণ চালিয়ে যাচ্ছে তারা।দখল দূষণের বিষয়ে বিশিষ্ট পানি বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদ ড. আইনুন নিশাত বলেন, যারা নদী দখল করেন তারা ক্ষমতাবান। দখলবাজদের বাঁচাতে অনেক হাত তৈরি আছে। নদী বাঁচাতে গেলে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে হবে। শুধু দখল আর দূষণ নয়, নদী শাসন এবং অপরিকল্পিত ব্রিজ, কালভার্ট, স্লুইস গেটের কারণে নিজস্ব গতিপথে চলতে পারছে না নদী।

সর্বশেষ খবর