সোমবার, ১৯ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

সংসদীয় আসনের সীমানা আগের অবস্থায় চায় বিএনপি

সিইসির সঙ্গে প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদের সীমানা ২০০৮ সালের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল এ দাবি জানায়। তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার  মোশাররফ হোসেন। বৈঠক শেষে খন্দকার মোশাররফ সাংবাদিকদের বলেন, এক-এগারোর সময় ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়। ১৩৩ আসনে ব্যাপকভাবে কাটাছেঁড়া করা হয়। এই বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছে। সীমানা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৯৮৪ সালে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে ৩০০ আসন নির্ধারণ করা হয়েছে এবং সেটার পরে কয়েকটি সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এ নির্বাচনগুলো ওই আসনের ভিত্তিতে হয়েছে। কিন্তু ২০০৮ এর নির্বাচনের আগে  সেই আসনগুলোকে ভেঙে প্রায় ১৩৩টি আসন পুনর্গঠন করেছে। যেখানে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব আইন-কানুনের ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। অর্থাৎ ভৌগোলিক সীমারেখা, প্রশাসনিক সুবিধা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা— এগুলো বিবেচনা না করে ১৩৩টি আসনে পুনর্বিন্যাসের নামে জগাখিচুড়ি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ২০০৮ এর আগে আসনগুলো যেভাবে ছিল, সেই অনুযায়ী আগামীতে আসন পুনর্বিন্যাস করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছি। যেহেতু নির্বাচন কমিশনের হাতে নির্বাচনের আগে সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষমতা আছে তাই ১৩৩টি আসনে যে অসামঞ্জস্যতা আছে তা দূর করে ৩০০ আসন পুনর্বিন্যাস করার জন্য আমরা বলেছি। খন্দকার মোশাররফ বলেন, নির্বাচনের আগে সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে সরকারকে চাপে রাখতে ইসির প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।

পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এক পক্ষের (বিএনপি) কথা শুনেছি। আমরা সবার সঙ্গে কথা বলব। এরপর সীমানা নির্ধারণে জটিলতা দূর করে সীমানা পুনর্বিন্যাস করা হবে। সিইসি বলেন, আমাদের যে রোডম্যাপ আছে সেখানে সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি আছে। এ বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করব। আর আমরা এই মুহূর্তে বলতে পারব না যে, আমরা ৮৪-তেই থাকব, না ২০০৮-এ যেটা ছিল সেটায় থাকব, নাকি ২০১৪-এর নির্বাচনে যেটা ব্যবহার করা হয়েছে সেটা ব্যবহার করব। তবে হ্যাঁ, সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা পরিবর্তন আনতে চাই। সেটা প্রথম শুনলাম একটা বড় রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে। এরপর আমরা পর্যায়ক্রমে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে, সুশীল সমাজ ও মিডিয়ার সঙ্গে আলোচনা করব। কাজেই ’৮৪ সালে ফিরে যাব এই মুহূর্তে এটা বলা যাবে না। আমরা চিন্তাভাবনা করব। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সমান করতে সরকারকে চাপ দেওয়ার জন্য বিএনপি কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এটা আমাদের বিষয় না। এটা সরকারের বিষয়। এখানে আমরা মন্তব্য করিনি। সেখানে আমাদের কোনো বক্তব্য ছিল না। এ বিষয়ে আমাকে বলেছেন উনারা।

তিনি বলেন, আমাদের এটা টেকনিক্যাল অফিস। আমরা আইন, সংবিধানের আলোকে নির্বাচন পরিচালনা করব। আবার যদি সরকার বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে, তখন  সেই আইন দিয়েই করব।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করে বিএনপি প্রতিনিধি দল। এ সময় সিইসির সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার,  মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। অন্যদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুর রশীদ সরকার ও ক্যাপ্টেন সুজাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর