শুক্রবার, ৩০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঈদ অজুহাতে যানবাহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের মচ্ছব

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ঈদ অজুহাতে যানবাহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের মচ্ছব

সাধারণত নতুন ব্রিজ থেকে পটিয়ার বাস ভাড়া ২০ টাকা। কিন্তু ঈদের আগের দিন থেকে গতকাল পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। নতুন ব্রিজ থেকে বাঁশখালীর ভাড়া ৬৫ থেকে ৮৫ টাকা। ঈদ অজুহাতে নেওয়া হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। তা ছাড়া নগরীতে বাস টেম্পোতে পাঁচ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। পাশাপাশি রয়েছে অটোরিকশার দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ। কেবল পটিয়া ও বাঁশখালী রোডে নয়, এভাবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, আনোয়ারা, বোয়ালখালী, লোহাগাড়া ও কক্সবাজার এবং উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, ফটিকছড়ি ও রাঙ্গুনিয়া রোডে চলছে ঈদ অজুহাতে যাত্রীর কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের মচ্ছব। এভাবে ঈদ অজুহাতে প্রতিটি যানবাহনে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে যানবাহনগুলোতে। চলছে যাত্রীদের পকেট কাটার মচ্ছব। ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী এবং যাত্রীর বিপরীতে যানবাহন সংকটকে পুঁজি করে চালকরা এমন অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ।

হাটহাজারীর যাত্রী জামশেদুল আলম বলেন, অক্সিজেন থেকে কাটির হাটের ভাড়া ৩০ টাকা হলেও ঈদের সময় আদায় করছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। ঈদের তিন দিন পরও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই গাড়িতে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছি। চট্টগ্রাম জেলার সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নগর থেকে উপজেলায় যাতায়াতের বাসগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি  আমরা

শুনেছি। তবে যাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অতিরিক্ত ভাড়া না নিতে তাদের বারণ করা হয়েছিল। তবুও তারা নিচ্ছে। কিন্তু কোনো যাত্রী এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটা সহজ হয়।’ চট্টগ্রাম মহানগর অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘নগরীতে বর্তমানে নিবন্ধিত ১৩ হাজার অটোরিকশার মধ্যে সচল আছে মাত্র ১০ হাজার। বাকিগুলো নষ্টসহ নানা কারণে বন্ধ। ফলে নগরীতে অটোরিকশার সংকট চরমে। এ সংকটকে পুঁজি করে কিছু চালক যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। তবে নতুন করে যে চার হাজার অটোরিকশা নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে এ সংকট কেটে যাবে।’ জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীতে গণপরিবহন সংকট দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে সরকারের কোনো পরিকল্পনা চোখে পড়ে না। কিন্তু ঈদ এলে এ সংকট চরম আকার ধারণ করে। সাধারণ যাত্রী পরিবহনের জন্য নগরীর ১০টি রুটে ৮৪৯টি বাস-মিনিবাস চলাচলের অনুমতি আছে। কিন্তু সড়কগুলোতে অনুমোদিত গাড়িগুলোর মধ্যে অনেক গাড়ি থাকে না। অনেক গাড়িই প্রাইভেট ভাড়ায় ব্যস্ত থাকে। সাধারণ যাত্রী পরিবহন না করায় এ সংকট চরম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। বেড়েছে জনদুর্ভোগ। যানবাহনের জন্য বিভিন্ন পয়েন্ট ও পথে পথে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ২৬-৩৬ আসনের একটি গাড়িতে উঠে দ্বিগুণ যাত্রী। এ কারণে হয় দুর্ঘটনা।

সর্বশেষ খবর