বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
কালের কণ্ঠ-এ্যাপোলো হসপিটাল গোলটেবিল বৈঠক

স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন রুখবে হেপাটাইটিস

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনিরাপদ পানি, খাবার, রক্ত দেওয়া-নেওয়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অসতর্কতা থেকে ছড়িয়ে পড়ে হেপাটাইটিস। তাই হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসকের সরণাপন্ন হতে হবে। নয়তো অবহেলা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে লিভার এমনকি বাসা বাঁধতে পারে মরণব্যাধি ক্যান্সার। তাই সচেতন ও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন বক্তারা।

গতকাল কালের কণ্ঠ-এ্যাপোলো হসপিটালস ও রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘হেপাটাইটিসের ঝুঁকি ও চিকিৎসা : প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে উঠে আসে এসব কথা।

বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়ার কনফারেন্স হলে কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ গোলটেবিল

 বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান। স্বাগত বক্তব্য দেন কালের কণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক মোস্তফা কামাল, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন এ্যাপোলো হসপিটালসের ঢাকার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা) ডা. আরিফ মাহমুদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহাসচিব, অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্ট্যাডি অব লিভার ডিজিজ-বাংলাদেশ এর মহাসচিব ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন ডেইলি সানের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, সরকারের ইপিআই কার্যক্রমের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর আলম সরকার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর পরিচালক এম এ সালাম, এ্যাপোলো হসপিটালসের গ্যাস্ট্রো অ্যান্ট্রোলজি বিভাগের সমন্বয়কারী ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. লুত্ফুল এল চৌধুরী, একই হাসপাতালের গ্যাস্ট্রো অ্যান্ট্রোলজি-লিভার ও মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. ইকবাল মুরশেদ কবীর, ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেপাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আশরাফুল আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শেখ মোহাম্মদ নূর-ই-আলম, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. আহমেদ লুত্ফুল মুবীন, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ ও রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক এম হারুন অর রশিদ। কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বাংলাদেশ কখনো থেমে থাকে না, এগিয়ে চলে—যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়। তাই হেপাটাইটিসের ঝুঁকি মোকাবিলায় অবশ্যই সফলতা আসবে। এক্ষেত্রে জডিন্স নিয়ে মানুষের মধ্যে আগে যেসব কুসংস্কার বা অবৈজ্ঞানিক চর্চা, অপচিকিৎসার প্রবণতা ছিল তা এখন অনেকটাই দূর হয়ে গেছে। তবে পর্যাপ্ত সচেতনতার ঘাটতি রয়েই গেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা বলেন, চিকুনগুনিয়া কিংবা ডেঙ্গু জ্বর হলে মানুষ এখন অনেক সহজে বুঝতে ও জানতে পারে। কিন্তু হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে অনেকেই জানতে পারে না। একপর্যায়ে গিয়ে যা ক্যান্সারে পরিণত হবে। আর সি ভাইরাস ধরা তো আরও কঠিন। অন্যদিকে ‘এ’ এবং ‘ই’ ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকার জন্য নিরাপদ পানি ও নিরাপদ খাদ্য অন্যতম প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করতে পারে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, হেপাটাইটিসে ভয়ের কিছু নেই— যদি নিরাপদ পানি থাকে, নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন নিশ্চিত করা যায়, স্বাস্থ্যসম্মত ও সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করা যায়। আর এরপরও যদি আক্রান্ত হয়ে যায় তবে এখন দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থাও অনেক উন্নত হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি নানামুখী কাজ চলছে। তবে এসব কাজে আরও সমন্বিত উদ্যোগ নিতে পারলে ফল পাওয়া যাবে দ্রুত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর