মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

বন্দরের ভয়াবহ অবস্থায় শঙ্কিত পোশাক ক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বন্দরের ভয়াবহ অবস্থায় শঙ্কিত পোশাক ক্রেতারা

চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানির পণ্যবাহী কনটেইনার পরিবহনের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ ও নাজুক বলে জানিয়েছে পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সংগঠনটি বলেছে, কনটেইনারজটে ক্রেতারা খুবই শঙ্কিত। কারণ ভারত ও ভিয়েতনাম যেখানে মাত্র ১৭ দিনে পণ্য পাঠায়, সেখানে বাংলাদেশের লাগে ৩৭ দিন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসা করা যায় না। তাই বন্দরে চলমান পরিস্থিতি সৃষ্টিতে জড়িত আমলাদের সরাতে হবে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। চট্টগ্রাম বন্দরে পোশাকশিল্পের আমদানি করা মালামাল খালাস ও রপ্তানিপণ্য জাহাজিকরণে জটিলতা এবং এ শিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করে বিজিএমইএ। এতে আরও বক্তব্য দেন বিজিএমইএ’র সহসভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ নাসির।

সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা করার দায়িত্ব। আর বন্দরসংশ্লিষ্টরা (সরকারি চাকরিজীবীরা) সরকারি বেতনে চলেন। তাদের দায়িত্ব বন্দর ঠিক করা। কিন্তু যারা কাজ করে না, তাদের বন্দর থেকে বাদ দিন। আমাদের করের টাকায় আর বেতন নেবেন না।’ লিখিত বক্তব্য পাঠ করে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েই পোশাকশিল্প প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। ফলে দুই বছরে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ১৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। আমাদের উদ্বেগ হলো, মন্থর প্রবৃদ্ধির ধারা থেকে এখনো বেরিয়ে আসেনি পোশাকশিল্প। ১৫ বছরের মধ্যে পোশাক রপ্তানিতে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে  ২০১৬-১৭ অর্থবছরে। উদ্বেগের বিষয়, সাম্প্রতিককালে সক্ষমতা হারিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় উদ্যোক্তারা ব্যাক টু ব্যাক দায়, প্রকল্প ঋণ, স্টকলট, কাস্টমস লায়াবিলিটি, টার্ম লোন, মন্দ সিআইবি রিপোর্ট নিয়ে ঝুঁকিতে আছেন। এ পরিস্থিতিতে যখন শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করছি, তখন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা-এর মতো আমাদের সামনে এসেছে চট্টগ্রাম বন্দর সংকট।’ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে এত কঠিন সংকটে পোশাকশিল্প আগে আর পড়েনি।

জাহাজে কনটেইনার বোঝাই আর খালাসে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত জরিমানা। পণ্য সময়মতো পাঠানো যাচ্ছে না। উড়োজাহাজেও পণ্য রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছি। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বিদেশি ক্রেতারাও সময়মতো পোশাক পাবেন না। ক্রেতারা ভারত, ভিয়েতনাম, ইথিওপিয়া ও মিয়ানমারের মতো দেশে তাদের অর্ডার সরিয়ে নিতে পারেন।’

সর্বশেষ খবর