মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

১১ দিনে দুদকে ৯২ হাজার অভিযোগ, শীর্ষে ভূমি

টোল ফ্রি হটলাইনে তথ্য দেওয়ার সুযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাত্র ১১ দিনে ৯২ হাজার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের হটলাইন সেবা-১০৬ নম্বরে জমা হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানের জন্য আপাতত ২৯২টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে দুদকের সংশ্লিষ্ট শাখায়। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে ভূমি নিয়ে। এরপর রয়েছে চিকিৎসা সেবা, পল্লী বিদ্যুৎ, টিআর ও কাবিখা সংক্রান্ত আর্থিক অনিয়ম। দেশের ৬৪ জেলার সাধারণ জনগণের সব ধরনের আর্থিক অভিযোগ জানাতে ২৬ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে হটলাইন নম্বর ১০৬ চালু করে দুদক। শুক্র ও শনিবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত হাজার হাজার অভিযোগের ফোনকল গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি জরুরি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যারা অভিযোগ করছেন। গতকাল পর্যন্ত যে অভিযোগগুলো প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানের জন্য বিবেচিত হয়েছে। সেসব অভিযোগ দুদকের যাচাই-বাছাই শাখায় পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন। দুদক সূত্র জানায়, টোল ফ্রি হটলাইন নম্বরে গত ১১ দিনে ভূমি-সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে সবচেয়ে বেশি ফোন করেছে সাধারণ মানুষ। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অভিযোগ ছিল নারী নির্যাতন ও মাদক-সংক্রান্ত। কিছু অভিযোগ তফসিলভুক্ত না হওয়ায় সেসব অভিযোগের ক্ষেত্রেই তাত্ক্ষণিক সমাধানের উপায়টি বাতলে দিয়েছেন দুদকের কর্মকর্তারা। হটলাইনে যারা ফোন করছেন, তাদের তিনটি পদ্ধতিতে সেবা দিচ্ছেন কল সেন্টার-সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, কল রেকর্ডের তথ্য অনুযায়ী কর্মদিবসের ৯ দিনে ৯২ হাজারের বেশি কল  এসেছিল। তাই ছুটির দিনেও দুদকের হটলাইন নম্বর চালু রাখার বিষয়ে উদ্যোগ নিতে কাজ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দুদকের তফসিলভুক্ত হলেই কল সেন্টারে আসা অভিযোগগুলো প্রাথমিক অনুসন্ধানের জন্য সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। হটলাইন-১০৬ জনগণের সঙ্গে কমিশনের সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবে। দুর্নীতির ঘটনা ঘটার সময় এবং আগে ও পরে ১০৬-এর মাধ্যমে অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া দুদকের হটলাইনটি চালাতে একটি বিশেষ উইং তৈরি করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান তিনি। বর্তমানে দেশব্যাপী দুদক কার্যালয়ে স্থাপিত বক্সে লিখিতভাবে অভিযোগ নেওয়া হয়। এর আগে জানুয়ারিতে টোল ফ্রি নম্বরটি অনুমোদন পায় দুদক। হটলাইন নম্বর চালু হওয়ার আগে শুধু লিখিতভাবে দুদক অভিযোগ গ্রহণ করত। গত বছর এপ্রিলে ইকবাল মাহমুদ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক কঠোর অবস্থান গ্রহণের পাশাপাশি নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। একটি হলো ১০৬ হটলাইন নম্বর চালু। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে দুর্নীতির অভিযোগে  গ্রেফতার করা হয়েছে। দুদক জানায়, সরকারি অফিসের সেবা না পেলেও অনেকেই দুর্নীতির অভিযোগ করেন না। লিখিত অভিযোগ করার ব্যাপারে অনেকের অনীহা রয়েছে। এসব কারণে সরকারি কার্যালয়ের ছোট-বড় অনেক দুর্নীতি অন্তরালে ঢাকা পড়ে যায়। এ কারণে দুর্নীতিবাজরা বহাল তবিয়তে দুর্নীতি করে চলে। অভিযোগ দেওয়ার ব্যাপারে মানুষের অনীহার ব্যাপারটা বিবেচনা করে দুদক হটলাইন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অপরদিকে হটলাইনের মাধ্যমে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকবে দুদক। কোন কোন ক্ষেত্রের দুর্নীতির অভিযোগ নেওয়া হবে সে বিষয়ে নীতিমালা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সবার মোবাইল নম্বর নিজ নিজ জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই কে কার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে তার ব্যাপারে দুদক দ্রুত জেনে নিতে পারবে।

সর্বশেষ খবর