শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের উদ্ভাবনী কার্যক্রমে মুগ্ধ দর্শক

বসুন্ধরায় শিল্প পণ্য প্রদর্শনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) জমে উঠেছে আন্তর্জাতিক শিল্প পণ্য প্রদর্শনী। দ্বিতীয় দিনে দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন স্বয়ংক্রিয় নানা যন্ত্রপাতির উদ্ভাবনী কার্যক্রম। প্রদর্শনীতে ছিল উপচে পড়া ভিড়।

এ প্রদর্শনীতে রয়েছে ১৮তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ১২তম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিক শো এবং ২৮তম ডাই-ক্যাম বাংলাদেশ এক্সপো। রাজধানীর কুড়িলে চার দিনব্যাপী আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে গতকাল গিয়ে দেখা গেছে, প্রত্যেক স্টলে কর্মীরা মেশিন চালাচ্ছেন। দর্শনার্থীদের তারা দেখিয়ে দিচ্ছেন কীভাবে কাজ করে এসব মেশিন। মেশিনারিজ সাপ্লাইয়ার, ইমপোর্টার উদ্যোক্তাদের হাতে-কলমে শিখিয়ে দিচ্ছেন। দেখাচ্ছিলেন স্বয়ংক্রিয় মেশিনে পোশাক প্যাকেটজাত করার অত্যাধুনিক যন্ত্র। দর্শকরা দেখেন, এ যন্ত্রে চোখের নিমিষেই কীভাবে তৈরি পোশাক প্যাকেটজাত হচ্ছে। তারা অবগত হন, একজন অপারেটরের মাধ্যমে একটি কারখানার সব পোশাকই প্যাকেটজাত করা সম্ভব। এ ছাড়া প্রদর্শন করা হয় বিশ্বের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের উত্পাদিত ফিনিশিং আয়রন। দুই হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত মূল্যে এ ফিনিশিং  আয়রনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত তাপে কাজ করা সম্ভব। ফলে অপারেটরকে তাপ সহ্য করতে হয় না।

মেলায় আরও রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের সুইং, নিটিং, অ্যামব্রয়ডারি, লন্ড্রি, ফিনিশিং, ডায়িং, ক্যাড/ক্যাম, প্রিন্টিং কাটিং, স্প্রেডিং মেশিনারিজ। এতে বিভিন্ন কোম্পানি তুলে ধরে প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম সুতা এবং ওভেন ও নিট শিল্পের জন্য উভয়ের মিশ্রণের সর্বাধুনিক সংগ্রহ। প্রদর্শনীতে আগত দর্শনার্থীর সামনে গার্মেন্ট শিল্পের জন্য প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম ফেব্রিকের নতুন এবং উদ্ভাবনীমূলক মিশ্রণও উপস্থাপন করা হয়। দেখানো হয় বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর গার্মেন্ট এক্সেসরিজ এবং মোড়কসহ সংশ্লিষ্ট পণ্যের বিস্তৃত সংগ্রহ। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ গার্মেন্ট এক্সেসরিজ, মোড়কিকরণ এবং লেভেল, জিপার, ট্যাগ, ট্যাপ, থ্রেড, রিবন, বাটন, রিভেট, লেইস, হুক, ট্রান্সফার ফিল্ম, পেপার, ইঙ্ক ইত্যাদিসহ সংশ্লিষ্ট মেশিনারিজও প্রদর্শন করা হচ্ছিল।

এ ছাড়া প্রদর্শনীতে দেখা গেছে, বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট শিল্পের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি, সুতা ও কাপড় উত্পাদক মেশিনারিজ, ডায়েস এবং বিশেষ রাসায়নিক দ্রব্যের বিশাল সমাহার। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্বের ২৫টি দেশের প্রায় ১১৫০টি প্রতিষ্ঠান ১৪০০টি স্টল দিয়ে এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করছে। প্রদর্শনীগুলো ভোক্তা এবং উদ্যোক্তাদের জন্য একটি যুগোপযোগী প্লাটফর্ম। যেখানে কার্যকরী যোগাযোগের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা নতুন নতুন প্রযুক্তি ও সেবার সঙ্গে পরিচিত হতে পারছেন। ভোক্তা, উদ্যোক্তা, আমদানিকারক ও সরবরাহকারীদের সরাসরি সাক্ষাৎ এবং আলাপচারিতার সুযোগ থাকার ফলে সবার মধ্যে সেতুবন্ধ গড়ে উঠছে- যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

প্রদর্শনী উপলক্ষে গতকাল সেমস্ গ্লোবাল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে ‘Chemical Safety and Management: Bangladesh Perspective’ বিষয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে বাংলাদেশের টেক্সটাইল এবং গার্মেন্ট সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ ও যুগোপযোগী বিষয়সমূহ আলোকপাত করা হয়। মেলা সংশ্লিষ্টরা জানান, এ শিল্প পণ্য প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর