সিলেট মহানগরীতে প্রথমবারের মতো সড়ক চারলেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এ নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন স্বপ্ন। নগরীর ক্বিনব্রিজের দক্ষিণ পাশ থেকে টার্মিনাল হয়ে মুক্তিযোদ্ধা চত্বর পেরিয়ে হুমায়ুন রশীদ চত্বর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কটি চারলেন করার কাজ চলছে। এ কাজে ব্যয় হবে প্রায় ১৮ কোটি টাকা। এদিকে, ক্বিনব্রিজের মোড় থেকে ঝালোপাড়া হয়ে হুমায়ুন রশীদ চত্বর পর্যন্ত সড়কটি উন্নীত করা হচ্ছে দুই লেনে। এ কাজে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। উভয় সড়ক ও সড়কের উভয় পাশে ড্রেন নির্মাণের কাজ বাস্তবায়ন করছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। সড়ক দুটির কাজ শেষ হলে নগরীতে যানজট কমার পাশাপাশি দক্ষিণ সুরমার জলাবদ্ধতা কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা যায়, যানজট নিরসন ও আধুনিক নগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে সিলেট নগরীর সড়কগুলোকে পর্যায়ক্রমে প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে সিটি করপোরেশনের। এরই অংশ হিসেবে ক্বিনব্রিজ মোড় থেকে হুমায়ুন রশীদ চত্বর পর্যন্ত সড়কটি চারলেনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি সড়কটি চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এর মাসখানেক পরে শুরু হয় প্রকল্পের কাজ। বিশ্বব্যাংকের মিউনিসিপ্যাল গর্ভমেন্ট অ্যান্ড সার্ভিস প্রজেক্টের (এমজিএসপি) আওতায় সড়কটি চারলেনে উন্নীত করা হচ্ছে। সিসিক সূত্র জানায়, প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কটি চারলেনে উন্নীত করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছ থেকে সড়কটি নিজেদের আওতায় নেয় সিটি করপোরেশন। পরে সড়কের আশপাশে দখলমুক্ত অভিযান চালানো হয়। বর্তমানে প্রকল্পের আওতায় সড়কের উভয়পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার প্রশস্ত ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে। এছাড়া সড়কের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন রোড ডিভাইডারও নির্মাণ করা হবে। এ ডিভাইডারে সৌন্দর্যবর্ধক বৃক্ষ লাগানো হবে। এ প্রকল্পে প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব। এদিকে, ক্বিনব্রিজের মোড় থেকে ঝালোপাড়া হয়ে হুমায়ুন রশীদ চত্বর পর্যন্ত প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার সড়কটি দুই লেনে উন্নীত করার প্রকল্পও নেওয়া হয়েছে। এজন্য সড়কের উভয়পাশে প্রায় দেড় কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ করা হবে।
এ সড়কটি দুই লেনে উন্নীত করতে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে জানান এনামুল হাবীব।
চারলেন সড়কটির কাজ সম্পূর্ণ হলে সিলেট কেন্দ ীয় বাসটার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন ও আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের সড়কে যে দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে সেটি আর হবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এছাড়া রাস্তার উভয় পাশে ড্রেন নির্মাণ হলে সুরমার দক্ষিণ তীরবর্তী এলাকায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবেন বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।এ ব্যাপারে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সিলেট মহানগরীতে প্রথমবারের মতো একটি সড়ক চারলেনে উন্নীত করা হচ্ছে। আগামী বছরের আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে। চারলেন হওয়ার পরও এ সড়কের উভয়পাশে কিছু জায়গা থাকবে। সেখানে বাইলেন সড়ক নির্মাণ করা হবে, যেখান দিয়ে রিকশা, সাইকেল তথা ছোট যান চলাচল করবে।’
মেয়র জানান, সিলেট নগরীর প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম যানজট ও জলাবদ্ধতা। দক্ষিণ সুরমার সড়ক চারলেন করার পর সুফল পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে নগরীর ব্যস্ততম এলাকার সড়কগুলো চারলেনে উন্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।