সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৫০ লাখ গরু

মোস্তফা কাজল

কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৫০ লাখ গরু

আসন্ন কোরবানি ঈদের জন্য প্রায় ৫০ লাখ গরু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গত বছর কোরবানি হয়েছিল প্রায় ৪৪ লাখ গরু। এবার বাড়তি থাকায় কোনো সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে না। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর যে ৪৪ লাখ গরু কোরবানি হয়েছিল তার ৩৩ লাখের জোগানই এসেছিল ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদের কাছ থেকে। ১৬ সালে গরু-মহিষ মিলিয়ে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ৪৫ লাখ ৫০ হাজার। আর ছাগল-ভেড়ার চাহিদা ছিল ৭৪ লাখ ৫০ হাজার। এ চাহিদার শতভাগই  মেটানো হয়েছিল দেশীয় পশুর মাধ্যমে। ফলে এবার ‘ভারত থেকে আমদানি না হলে কোরবানিতে গরু-ছাগলের সংকট তৈরি   হবে’ বলে যে ধারণা করা হচ্ছিল, তা বদলে যেতে শুরু করেছে। যদিও স্থলবন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে গরু আমদানির সুযোগ করে দিয়েছে সরকার।

সূত্র মতে, এ বছর গ্রামাঞ্চলের খামারে পালিত দেশীয় গরু-ছাগল দিয়েই কোরবানির চাহিদা পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্র জানায়, অবৈধ এবং ক্ষতিকর উপায়ে পশু মোটাতাজাকরণ রোধে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। এ কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন দেশের একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া কোরবানির পশুর হাটগুলোতে মনিটরিং টিম থাকছে। দেশের ৭ বিভাগীয় শহরে কমবেশি ৬০টি হাট এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ৫৪০টি হাটে দেশি গরুর বিপুল সরবরাহ থাকায় গত বছর যেমন সংকট হয়নি, চলতি বছরও একই রকম সরবরাহ থাকায় কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না। দেশি গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল দিয়েই কোরবানির পশুর চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।  সূত্রের হিসাব মতে, এ বছর ৫০ লাখ গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত থাকবে। দেশের কৃষকদের খামারে পালিত পশু দিয়েই এ চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। কারণ ক্ষুদ্র এবং মাঝারি খামারিদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৩৪ থেকে ৩৫ লাখ গরু। আর গৃহস্থের ঘরে পালিত গরু ও মহিষ পাওয়া যাবে ১৪ থেকে ১৫ লাখ। আরও পাওয়া যাবে ছাগল ও ভেড়া।

 এ ব্যাপারে মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক বলেন, গত বছর কোরবানিতে পশু সংকট হয়নি, এবারও হবে না। কারণ সরকারের পক্ষ থেকে খামারিদের ব্যাংক ঋণের সুবিধাসহ নানান সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কাজেই খামারিরা কোরবানির অপেক্ষায় রয়েছেন। যদিও কিছু খামারি তাদের পালিত গরু নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দেশের সর্বত্র জেলা প্রশাসনের সহায়তায় এ পরিস্থিতি থেকে উতরে ওঠা সম্ভব হয়েছে। মন্ত্রী জানান, প্রস্তুত রাখা পশুগুলোর যাতে কোনো রোগ-বালাই না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে জেলা-উপজেলায় চিকিৎসকদের সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ব্রাজিলের বুলের (ষাঁড়) মাধ্যমে দুই বছরে পরিপক্ব গরু উৎপাদনে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়। উৎপাদন বাড়াতে ব্রাজিল থেকে প্রযুক্তি এনে তা ব্যবহারের মাধ্যমে দেড়-দুই বছরের মধ্যে গরু পরিপক্ব করে তোলা হবে। এ বিষয়ে ব্রাজিলের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীকে ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।  বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব টিপু সুলতান বলেন, এবারও রাজধানী ঢাকা থেকে সাড়ে তিন লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য আছে আমাদের। আমরা লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হব। কারণ এক জরিপে দেখা  গেছে, প্রতি বছরই দেশের সর্বত্র পশু কোরবানির গবাদিপশুর সংখ্যা বাড়ছে।

সর্বশেষ খবর