শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাবিতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা

ছাত্রলীগ ও শিবির মুখোমুখি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

‘ছাত্রলীগ ও শিবির’ ইস্যুতে অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে ছাত্রশিবির। অন্যদিকে শিবিরকে মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ছাত্রলীগ। এই দুই রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের মধ্যে যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে রাবিতে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে ছাত্রশিবির। গত ৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ১৩ শিবির নেতা-কর্মীকে মারধর করে পুলিশে ধরিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। এরপর থেকেই নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে শিবির। ঘটনার পরের দিন ৯ আগস্ট ছাত্রলীগকে ‘সমুচিত জবাব’ দেওয়ার হুমকি দেয় তারা। এরপর গত ১৬ আগস্ট দীর্ঘ তিন বছর পর ক্যাম্পাসে মিছিল করে তারা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত তিন বছর ধরে রাবির সব আবাসিক হলে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য চলছে। গোলাম কিবরিয়া ও ফয়সাল আহমেদ রুনু বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর হলগুলোতে নিজেদের অবস্থান আরও পাকাপোক্ত করতে একটি করে পলিটিক্যাল ‘ব্লক’ তৈরি করে ছাত্রলীগ। হলগুলোতে প্রায় প্রতি রাতেই শিবিরবিরোধী স্লোগান দেন তারা। অন্যদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে হলগুলো দখলের ‘নীল নকশা’ তৈরি করেছে ছাত্রশিবির। গত ৬ মাসে প্রত্যেক হলে অর্ধশতাধিক করে শিবিরের নেতা-কর্মী অবস্থান নিয়েছেন। তারা যে  কোনো মুহূর্তে ছাত্রলীগের ওপর হামলা করতে পারেন বলে মনে করছেন খোদ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, শিবিরকে মোকাবিলা করার জন্য রাবি শাখা ছাত্রলীগ প্রস্তুত রয়েছে। প্রত্যেক হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। শিবির নিধনে প্রয়োজনে চিরুনি অভিযান চালানো হবে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। এদিন সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের ওপর হামলার জন্য ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবির প্রবেশের চেষ্টা করে বলে দাবি ছাত্রলীগের।

 তবে খবর পেয়ে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ফটক বন্ধ করে দেয় পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত ১৫০ পুলিশ সদস্য। ডিন্স কমপ্লেসের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। পুরো ক্যাম্পাসে সার্বক্ষণিক পুলিশের ১০টি কাভার্ড ভ্যান টহল দিতে দেখা যায়।  রাত ৮টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায় শিবির। এসময় হলগুলোতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতে রড ও ধারালো অস্ত্রও দেখা যায় বলে হল সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও পুরো ক্যাম্পাসে  মোটরসাইকেল নিয়ে শো ডাউন করে ছাত্রলীগ। এতে পুরো ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, শিবির একত্রিত হয়ে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ক্যাম্পাসের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় অভিযানও চালানো হয়েছে। অভিযানে পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর