সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

অপরিকল্পিত উন্নয়নের কবলে চট্টগ্রাম

প্রকল্পে হচ্ছে না সম্ভাব্যতা যাচাই

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়নযজ্ঞ চলছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে।  অভিযোগ রয়েছে, অপরিকল্পিতভাবেই হচ্ছে এসব উন্নয়ন প্রকল্প। এমনকি এসব প্রকল্প পরিকল্পনা তৈরির আগে যাচাই করা হচ্ছে না এগুলোর সম্ভাব্যতা। অনুসরণ করা হচ্ছে না মাস্টারপ্ল্যান। নগর পরিকল্পনাবিদ ও সচেতন মহলের দাবি, মাস্টারপ্ল্যান অনুসরণ না করে অপরিকল্পিত উন্নয়ন একসময় গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে চট্টগ্রামের। অপরিকল্পিত এ উন্নয়ন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে এবং অভিজ্ঞ লোকদের দিয়ে সরকার চাইলে একটি উন্নয়ন কমিটি গঠন করতে পারে।’ প্রকৌশলী এম আলী আশরাফ বলেন, ‘অপরিকল্পিত উন্নয়নের নানামুখী সমস্যায় ভুগছে চট্টগ্রাম মহানগর। জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে ‘খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি প্রকল্প পেয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), যা ৯ জুলাই একনেক অনুমোদন দেয়। অভিযোগ রয়েছে, কোনো ধরনের সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই তৈরি করা হয়েছে প্রকল্প পরিকল্পনা। এ ছাড়া এ প্রকল্পের সঙ্গে বাস্তবতার রয়েছে অনেক অসঙ্গতি। মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন চট্টগ্রামের বৃহত্তম ‘আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের’ শুরুর দিকে নকশা নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। পরে নগর পরিকল্পনাবিদ ও সুশীল সমাজের সমালোচনার মুখে পরিবর্তন আনা হয় মূল নকশার। ফ্লাইওভারে যুক্ত করা হয় র‌্যাম্প ও লুপ। এতে করে বেড়ে যায় প্রকল্পের ব্যয়। ১৯৯৫ সালে প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানে ২০১৫ সালের আগে চট্টগ্রামে কোনো ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করা হলেও ২০১১ সালে শুরু হয় বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ, যা উদ্বোধন হয় ২০১৩ সালে। কিন্তু কালুরঘাটমুখী র‌্যাম্প না করায় ফ্লাইওভারে খুব একটা যানবাহন চলাচল করে না। যদিও অনেক সমালোচনার পর কালুরঘাটমুখী র‌্যাম্প তৈরির উদ্যোগ নেয় সিডিএ। একইভাবে কদমতলী ও দেওয়ানহাট ফ্লাইওভার তৈরির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। অপরিকল্পিতভাবে এ দু্ই ফ্লাইওভার নির্মাণের ফলে ফ্লাইওভার নগরের যানজট নিরসনে কোনো অবদান রাখেনি বলে মনে করেন তারা। ‘স্পেশাল অ্যাসিসটেন্স ফর প্রজেক্ট ফরমেশন ফর চিটাগাং সিটি রিং রোড’ নামে পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা পর্যন্ত চার লেন সড়ক-কাম-বেড়িবাঁধ নির্মাণ মাস্টারপ্ল্যানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং পরিবেশ ও  অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অযৌক্তিক বলে দাবি পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর