শিরোনাম
সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

ক্ষতিগ্রস্তদের প্রণোদনা দেবে সরকার

বন্যার্ত: কৃষকদের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ

মানিক মুনতাসির

সারা দেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেবে সরকার। এক্ষেত্রে বন্যাপরবর্তী দ্রুততম সময়ে কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে জরিপ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জরিপের তথ্য অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছে অর্থবিভাগ। সেই তালিকা কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি বিভাগেও পাঠাতে হবে। এরপর ক্ষতিগ্রস্তদের নগদ সহায়তা হিসেবে অর্থ দেওয়া হবে। সূত্র জানায়, এই সঙ্গে বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকদের সব ধরনের কৃষি বা অকৃষি ঋণ এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) বিভিন্ন ধরনের ঋণের কিস্তি উত্তোলন আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন এবং পরবর্তী ফসল বুনতে পারেন- সেজন্যও প্রণোদনা দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, এমন পদক্ষেপ বন্যাপরবর্তী দেশে খাদ্য সংকট সৃষ্টি থেকে অনেকটাই আশঙ্কামুক্ত করবে বলে মনে করেন খোদ অর্থমন্ত্রীও। গত সপ্তাহে অর্থবিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে দ্রুত প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। সরকারি-বেসরকারি তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত বন্যায় সারা দেশের এক-তৃতীয়াংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। আর এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে কমপক্ষে অর্ধকোটি মানুষ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর গত শুক্রবার জানিয়েছে, চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় দফা বন্যায় এ পর্যন্ত ৬ লাখ ১৮ হাজার ৭০৯ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত বন্যাকবলিত ২৭ জেলার ১৩৩ উপজেলা ও ৪৩টি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় প্রায় ১১ লাখ ৪১ হাজার পরিবারের ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৭০৬ জন বানভাসি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যার ৮০ ভাগ মানুষই কৃষক। এদের সবাইকে প্রণোদনার আওতায় আনার সুপারিশ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। অন্যথায় বন্যাপরবর্তী এসব মানুষ চরম দুর্ভোগ ও দুর্দশার মধ্যে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের তথ্য মতে, বন্যাকবলিত এলাকায় ১৪ হাজার ৭৩৭টি ঘর সম্পূর্ণ এবং ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৬টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাদুর্গত জেলাগুলোতে অন্তত ৪২ হাজার ৩১১টি টিউবওয়েল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণ সহায়তার মাধ্যমে এসব টিউবওয়ের দ্রুত মেরামত বা পুনঃস্থাপন করে মানুষের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে অর্থবিভাগ থেকে। চলমান বন্যায় দেশের ৩০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিস্তার ও স্থায়িত্বে ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের দুটি বড় বন্যার মতো ভয়াবহ না হলেও এবারের বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মৃতের সংখ্যা ওই দুই বছরের হিসাবকে ছাড়িয়ে গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর