মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিনোদন কেন্দ্রগুলোয় মানুষের ঢল

নিরাপত্তা বলয় প্রশাসনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের ছুটিতে পুরো ঢাকা মহানগরীতে যানজট না থাকলেও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল মানুষের ঢল। রাজধানী ও আশপাশের সব বিনোদন কেন্দ্রেই ভিড় জমিয়েছেন নানা বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। দেশের অন্যান্য স্থানেও ছিল একই চিত্র।

রাজধানীর অভ্যন্তরে হাতিরঝিল, শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানাসহ সব বিনোদন কেন্দ্রে ছিল হাজার হাজার মানুষের সমাগম। ঈদের দিন হাতিরঝিল অগণিত মানুষের পদচারণায় ছিল মুখরিত। পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ ভিড় জমিয়েছেন রাজধানীর নিকটবর্তী গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে, আশুলিয়া এলাকার ফ্যান্টাসি কিংডমে, নন্দন পার্কে এবং নরসিংদী এলাকায় স্থাপিত ড্রিম হলিডে পার্কে। গতকাল ঈদের পর তৃতীয় দিনেও বিনোদনপ্রেমী মানুষের ব্যাপক সমাগম ছিল এসব জায়গায়। সরেজমিন দেখা গেছে, ঈদ আনন্দ যেন উপচে পড়েছে রাজধানীর হাতিরঝিলে। রাজধানীবাসীর ঘুরতে যাওয়ার পছন্দের অন্যতম স্থান এই হাতিরঝিল। সকাল থেকেই নগরবাসীর পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে এ স্থান। বিনোদনপ্রেমী মানুষ উপভোগ করেছেন ঝিলের সৌন্দর্য। ঈদ উপলক্ষে হাতিরঝিলকে সাজানো হয়েছিল নতুন সাজে। প্রস্তুত ছিল চক্রাকার বাস, ওয়াটার বোট। সন্ধ্যা হতেই হাতিরঝিল সাজে রংয়ে রঙিন রূপ ধারণ করে। চোখ ধাঁধানো রঙিন আলোয় ঝলমলে হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। রং-বেরংয়ের দৃষ্টিনন্দন বাতি এনে দেয় নজরকাড়া সৌন্দর্য। ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীর নিরাপত্তায় হাতিরঝিলের মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিভিন্ন পয়েন্টে মোটরসাইকেল ও সন্দেহভাজন গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া রাজধানীর শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানায় অসংখ্য মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মিরপুরের চিড়িয়াখানা লক্ষাধিক মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। বিভিন্ন বয়সী মানুষের পাশাপাশি শিশুদের আনন্দ বাঁধ ভেঙে পড়েছিল চিড়িয়াখানায়। গেট দিয়ে ঢুকতে ছিল দীর্ঘ লাইন। হাজার হাজার মানুষের চিড়িয়াখানায় ঢুকতে লেগেছে কয়েক ঘণ্টা। মানুষ একটু বিনোদন পেতে গরম উপেক্ষা করেও এখানে ঢুকেছেন। ঘুরতে আসা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা বছর কাজের চাপে বেড়াতে যাওয়ার সময় পাওয়া যায় না। সন্তানদের নিয়ে তাই এই ঈদের ছুটিতে চিড়িয়াখানায় অবসর কাটানো অনেক আনন্দের। শাহবাগের শিশুপার্কের ছোট্ট পরিসরেও যেন তিল ধারণের জায়গা ছিল না। গতকাল গিয়ে দেখা গেছে, শত শত লোকের দীর্ঘ লাইন। টিকিট কাটতে সময় লেগেছে ঘণ্টার বেশি সময়। পার্কের ভিতরে গিয়েও দেখা গেছে একই চিত্র। প্রতিটি রাইডের সামনে লাইন। গরমে ঘেমে একাকার হয়েও যেন রাইডে উঠতে হবে। শুধু শিশুরা নয়, সব বয়সের মানুষই রাইডে উঠেছেন। শাহবাগের আরেক বিনোদন কেন্দ্র জাদুঘরে হাজার হাজার দর্শনার্থী আসেন ঈদের ছুটি কাটাতে। আগারগাঁওয়ে পুরনো বিমানবন্দরে বিমান বাহিনী জাদুঘরও রাজধানীবাসীর মিলনমেলায় পরিণত হয়। লালবাগ কেল্লায়ও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। তবে দর্শকদের কিছুটা ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী আহসান মঞ্জিলে। পুরনো এই জমিদার বাড়ির সৌন্দর্য উপভোগ করতে যারা সকালে গিয়েছেন, তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে কয়েক ঘণ্টা। এছাড়াও বিনোদন পেতে রাজধানীর খোলা জায়গায়, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পেছনে তিনশ ফুট সড়কের পাশে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন।

ঢাকার পার্শ্ববর্তী গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানান, ঈদের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকেই দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেন। দুপুর নাগাদ এ সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়। পাঁচটি ভাগে বিভক্ত সাফারি পার্কের একটি অংশ কোর সাফারি পার্ক- যাতে বাঘ, সিংহ, ভালুক, হরিণ, জেব্রা, জিরাফ, হাতি ইত্যাদি আলাদা আলাদা সীমানা প্রাচীরের ভিতর উন্মুক্ত বিচরণ করে। এসব প্রাণী দেখতে নির্ধারিত ফি দিয়ে দর্শনার্থীদের পার্কের নির্ধারিত মিনিবাস ও গাড়িতে চড়ে যেতে হয়।

অন্যান্য স্থান থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

বরিশাল : ঈদের ছুটিতে আনন্দ ভাগাভাগি করতে বরিশালের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সব বয়সের মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। পরিবার, স্বজন, বন্ধু-বান্ধবী নিয়ে অগণিত মানুষ ঘুরে বেড়িয়েছেন বরিশালের প্লানেট পার্ক, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, স্বাধীনতা পার্ক, বঙ্গবন্ধু উদ্যান, শহীদ কাঞ্চন পার্ক, গ্রিন সিটি পার্ক, গুঠিয়ার দৃষ্টিনন্দন বায়তুল আমান মসজিদ কমপ্লেক্স ও ঈদগাহ এবং কীর্তনখোলা নদীতীরবর্তী বেড়িবাঁধের মনোরম পরিবেশে। এসব কেন্দ্রে সারা বছর বিনোদনপ্রেমীদের আনাগোনা থাকলেও ঈদের সময় জনস্রোত নামে।

বরিশালের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র প্লানেট পার্কের ব্যবস্থাপক সোহরাব হোসেন জানান, ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে প্লানেট পার্ক লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। পার্কে বেড়ানো ছাড়াও ৬ ধরনের রাইডে (খেলনা) চড়ে আনন্দ উপভোগ করেন শিশুসহ সব বয়সের মানুষ। আরও ২-৩ দিন এই ভিড় অব্যাহত থাকবে।

রংপুর : ঈদের নামাজের পর থেকেই রংপুরে শুরু হয় বৃষ্টি। কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনো মুষলধারায় চলে বৃষ্টি। পরের দিনও ছিল থেমে থেমে বৃষ্টি। তবে এ বৃষ্টি থামাতে পারেনি মানুষের বিনোদনকে। ঈদকে ঘিরে রংপুরের বিনোদন কেন্দ্রগুলো জমে উঠেছে।

ঈদের দিন থেকে নির্মল আনন্দের স্বাদ নিতে নানা বয়সের মানুষ ছুটে আসেন রংপুর চিড়িয়াখানা, রংপুর জাদুঘর, সিটি চিকলি পার্ক, ঘাঘট পাড়ের প্রয়াস, ভিন্ন জগৎ, আনন্দনগর, সুরভি উদ্যান, ফ্যান্টাসি জোন, মহিপুরঘাট, তিস্তা সড়ক সেতু, ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাস, বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রে। প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রেই দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় ছিল। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই মেলেনি। গতকালও দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আবহাওয়া ভালো থাকায় গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষ নির্মল আনন্দে ঘোরাঘুরি আর আনন্দের মধ্য দিয়ে ভাগাভাগি করেছেন ঈদের আনন্দ। এদিন নগরীর মাহিগঞ্জ থেকে ছেলে, ছেলের বউ এবং একমাত্র নাতিকে নিয়ে বিনোদন কেন্দ্র প্রয়াসে আসেন গৃহিণী শাহনাজ পারভীন রেশমা। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে দুদিন বের হতে পারিনি। তাই আজ সকাল থেকে বেশ কয়েকটি বিনোদন কেন্দ ঘুরলাম। ভীষণ আনন্দ করছি।  

এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রের ভিতরে-বাইরে পোশাকে ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলে এলাহী জানান, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় সব বিনোদন কেন্দ্রে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম : ঈদের আমেজে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম শহর। তেমন যান চলাচল না থাকায় সড়কগুলো রয়েছে ফাঁকা। তবে বিকাল হতে না হতেই শুরু হচ্ছে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড়। চট্টগ্রাম নগরীর কাজীরদেউরি শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক ও সি-ওয়ার্ল্ড, বহদ্দারহাটের স্বাধীনতা পার্ক, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, সিআরবি এলাকা, আগ্রাবাদের কর্ণফুলী শিশুপার্ক ও বিমানবন্দর রোডের বাটারফ্লাই পার্কে দর্শনার্থীর ভিড় বিকাল থেকে প্রতিদিন ক্রমশ বেড়েছে। কাজিরদেউরি শিশুপার্কে আসা ওয়াসি তাবাস্সুম নামের এক স্কুলপড়ুয়া দর্শনার্থী বলেন, এ বন্ধের সময় শিশুপার্কগুলোতে দারুণ মজা লাগে। সুন্দর পরিবেশ এবং কোরবানির ঈদের বন্ধে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দ করা যায়। সঙ্গে আমার মা-বোনও রয়েছে।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব রুহুল আমীন বলেন, ঈদ আনন্দকে প্রাণবন্ত করতে চিড়িয়াখানায় বিনোদনপ্রেমীরা বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি দেখতে আসছেন প্রতিনিয়ত। এখানে রয়েছে বাঘ-বাঘিনী, সিংহ-সিংহী, হরিণ, ভালুক, জিরাপ, অজগর সাপের মতো আরও অনেক কিছুই দর্শনার্থীরা দেখার জন্য ভিড় করছেন।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র ফয়’স লেকেও দর্শনার্থীর ভিড় রয়েছে। ফয়’স লেকের ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, বাম্পার কার, ফেরিস হুইল, রেড ড্রাই ইড, কফিকাপ, সার্কাস সুইং, পাইরেট শিপ, ইয়োলো ড্রাইয়ে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। ফ্যামিলি পুল মাল্টি রাইড ও ডোম রাইড, ড্যান্সিং জোন, কৃত্রিম বৃষ্টি ও চিলড্রেন পুল ও বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের রাইডে দর্শনার্থীরা বেশি ভিড় করছেন।

স্বাধীনতা পার্কের পরিচালক মো. সায়েম বলেন, শিশু থেকে নানা বয়সী দর্শনার্থী বহদ্দারহাটের স্বাধীনতা পার্কেও (মিনি বাংলাদেশ) ভিড় করছেন। স্বাধীনতা পার্কের ভিতরে থাকা জাতীয় সংসদ ভবন, দরবার হল, আহসান মঞ্জিল, হাই কোর্ট, লালবাগ  কেল্লা, কার্জন হল, সোনা মসজিদ, কান্তজির মন্দির, বড়কুঠি, ছোট কুঠি, পাহাড়পুর বিহার, সেন্ট নিকোলাস চার্চ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, ট্রেনের নিচে ব্রিজ, ছয়টি কিউচ (বসার স্টল) ও চিরন্তন পল্টি দেখতে ভিড় রয়েছে।

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত সুর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভূমি সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা। দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের উন্মাদনায় সৈকতজুড়ে এখন আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করছে। নানা বয়সী পর্যটকের আগমনে রাখাইন মার্কেট, ঝিনুকের দোকান, খাবারঘর, চটপটির দোকানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোয় কেনাকাটার ধুম পড়েছে। গতকালও হোটেল-মোটেলগুলোতে পর্যটকরা উঠতে শুরু করেন। এ অবস্থায় সৈকতের কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৈকত লাগোয়া নারিকেল বাগান, ইকোপার্ক, ইলিশ পার্ক, জাতীয় উদ্যান, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, সীমা বৌদ্ধ বিহার, সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চলখ্যাত ফাতরার বনাঞ্চল, ফকিরহাট, গঙ্গামতি, কাউয়ার চর, লেম্বুর চর, শুঁটকিপল্লী ও কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টে শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতীসহ নানা বয়সী পর্যটকের পদচারণায় এখন মুখরিত। পর্যটকরা স্মার্ট ফোনে সেলফি ও ভিডিও ক্লিপস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

ভ্রমণে আসা ব্যবসায়ী রফিকুল ও আয়শা দম্পতি জানান, সৈকতের অপরূপ দৃশ্য দেখে অসাধারণ লাগছে। দর্শনীয় স্পটে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘুরে দেখেছি। শিক্ষার্থী জান্নাতুল রুবি ও তিশা জানান, প্রথমবারের মতো কুয়াকাটায় এসেছি। খুব ভালো লেগেছে। সুযোগ পেলে প্রকৃতির টানে বার বার ছুটে আসব। অপর এক শিক্ষার্থী মাহিয়া জান্নাত মৌ বলেন, সমুদ্রে উন্মাদনার সঙ্গে গোসল করার ছবি তুলে এফবিতে পোস্ট করেছি। একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের লোভনীয় দৃশ্য অবলোকন করা যায়। তাই বন্ধুদের এফবির মাধ্যমে এখানে আহ্বান করেছি।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরিফ জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। ঈদের পরদিন থেকে কুয়াকাটায় আগাম বুকিং অনুযায়ী পর্যটক রয়েছে। চলতি মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি।

সর্বশেষ খবর