বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

চালের দামে ঘোড়দৌড়ের নেপথ্যে রোহিঙ্গা ইস্যু

সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি বেড়েছে ২০০ টাকা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহ আগে ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা ভারতীয় আতপ চাল বিক্রি হতো ২ হাজার ৮০ থেকে ২ হাজার ১০০ টাকায়। কিন্তু বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩৫০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। স্বর্ণা সিদ্ধ চাল বিক্রি হতো ২ হাজার টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া বর্তমানে পাইকারি বাজারে মিনিকেট (আতপ) বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬৫০, জিরাশাইল (সিদ্ধ) ২ হাজার ৪৫০ থেকে ২ হাজার ৫৫০, মিনিকেট (সিদ্ধ) ২ হাজার ৪৫০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, দেশি পাইজাম (আতপ) ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা। চট্টগ্রামে চালের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলী বাজার ঘুরে দাম বাড়ার এ চিত্র পাওয়া যায়। ব্যবসায়ীরা জানান, আগে চালের বুকিং দর টনপ্রতি ৩৫০ থেকে ৩৬০ ডলার ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা বেড়ে ৩৯৫ থেকে ৪০০ ডলার হয়েছে। বুকিং দর বাড়ার বিষয়টি চালের দামের ওপর প্রভাব ফেলে।

তা ছাড়া কয়েক দিনে দেশে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে চালের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। অথচ যে হারে চাহিদা বেড়েছে সে হারে চালের সরবরাহ বাড়েনি। এভাবে চট্টগ্রামে চালের মূল্যে ঘোড়দৌড় ভর করেছে। চালে সরকার আমদানি শুল্ক ২ শতাংশে নামিয়ে এনে, বাকিতে ঋণপত্র খোলার সুযোগ দিয়ে এবং সরকারিভাবে চাল আমদানি করেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। প্রতি কেজি চালে ৩ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত দর বেড়েছে। দেশের মানুষের প্রধান এই খাদ্যের দাম এমন ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস উঠেছে। নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দৈনন্দিন জীবনে। অভিযোগ উঠেছে, চালের দাম প্রতিযোগিতা করে বাড়লেও এটি নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। বাজারে নেই দৃশ্যমান তদারকি। তদারকির দায়িত্বে থাকা দফতরগুলোও আছে কুম্ভকর্ণের ঘুমে। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোর নীরবতায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। ফলে দেশে বাড়ছে খাদ্যের চাহিদা। কনজুমারস অ্যাসোয়িয়েশন অব বাংলাদেশ—ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘সরকার চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু একশ্রেণির অসাধু সিন্ডিকেট বাজার অস্থির করে তুলছে। সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর কোনো মনিটরিং না থাকায় ক্রমেই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। এর সঙ্গে আছে খাদ্য বিভাগের নীরবতা। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে কঠোর তদারকির কোনো বিকল্প নেই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর