শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

পাহাড়কে কারাগারে পরিণত করা হয়েছে : সন্তু লারমা

রাঙামাটি প্রতিনিধি

পাহাড়কে কারাগারে পরিণত করা হয়েছে : সন্তু লারমা

শাসকগোষ্ঠী পার্বত্যাঞ্চলকে কারাগারে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। সরকারের অবৈধ শাসন কার্যক্রমে পাহাড়ের মানুষ জিম্মি। শাসকগোষ্ঠী জুম্ম জাতির অধিকার পদদলিত করার কারণে সুস্থভাবে জীবনধারণ করতে পারছে না তারা। পার্বত্য চুক্তির ২০ বছর অতিবাহিত হলেও পাহাড়ের মানুষ বেঁচে থাকার মতো ন্যূনতম বাস্তবতা অর্জন করতে পারেনি। তাই পার্বত্যাঞ্চলের ১৪টি জাতিগোষ্ঠী অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কারণ তারা জাতিগত, সম্প্রদায়গত, অর্থনীতিগত, সংস্কৃতিগত অধিকার বঞ্চিত। ঔপনিবেশিক কায়দার জাঁতাকলে বন্দী হয়ে আছে পাহাড়ের মানুষগুলোর জীবনমান। তিনি পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন সংগ্রামে পাহাড়ি শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে আরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। গতকাল সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৭৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাঙামাটি শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।

এ সময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, আদিবাসী ফোরামের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, মহিলা সমিতির নেত্রী কল্পনা চাকমা প্রমুখ।

সন্তু লারমা আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে এ পার্বত্যাঞ্চলে বৈরী শাসন চলে আসছে। তিনি বলেন, সরকার পার্বত্য চুক্তিকে প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করে ঔপনিবেশিক কায়দায় পার্বত্যাঞ্চলে শাসনব্যবস্থা অব্যাহত রেখেছে। এতে করে অধিকার বঞ্চিত পাহাড়ের মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠেছে। তা ছাড়া চুক্তি অনুযায়ী পাহাড়ের জুম্ম জাতি এখনো তাদের ভূমি অধিকার ফিরে পায়নি। তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। এ কারণে পাহাড়ে ভূমি বিরোধ সংঘাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে এ অঞ্চলে ৭ লাখ বহিরাগতের অবস্থানের কারণে জুম্ম জনগণকে সংখ্যালঘুতে পরিণত করেছে। ৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় এমএন লারমা পাহাড়ের জুম্ম জনগণের স্বাধিকার ও অধিকার নিয়ে যে দাবি উত্থাপন করেছিলেন; সে দাবির আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সংগ্রাম এগিয়ে নিয়েছে। তার প্রতিফলন পার্বত্য চুক্তি। এ চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন হলে পার্বত্যাঞ্চলের মানুষ তাদের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার ফিরে পাবে। তাই তিনি যুবসমাজকে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর