রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প

গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তির মাধ্যমে

মাহবুব মমতাজী

দেশে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১৫০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই)। গত মাসে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবটি জমা দেওয়া হয়েছে। এটি অনুমোদন পেলে দুর্ঘটনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি সড়কে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। ফলে অনেক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন এআরআইর গবেষকরা।

এআরআই সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পে প্রযুক্তিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সম্পূর্ণ প্রকল্পটিই প্রযুক্তিনির্ভর। গাড়ির গতি প্রযুক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ওভারটেকিং ঠেকানো হবে। এসবের জন্য একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ রাখা হবে। প্রকল্পের আওতায় থাকা সব ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। ওই ক্যামেরায় স্পিড ডিভাইসও বসানো থাকবে। গাড়ি কত গতিতে যাচ্ছে তা ক্যামেরার মাধ্যমে নিরূপণ করা হবে। ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী প্রতিটি গাড়ির চালকদের কাছে মোবাইলে মেসেজ অপশনে জানানো হবে গাড়ি চালানোর ধরন। আর বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালালে মেসেজের মাধ্যমে জরিমানার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া চালকদের সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণের বিষয়টিও থাকবে। গাড়ির বিস্তারিত তথ্য সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে গাড়ির নম্বর দেখে শনাক্ত করা হবে। সিঙ্গাপুরসহ পশ্চিমা কিছু দেশের আদলে সবকিছু করা হবে। এআরআইর সাবেক পরিচালক ড. মাহবুব আলম তালুকদার এ প্রতিবেদককে জানান, প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। আর এই মৃত্যুর সঠিক হিসাব কোথাও নেই। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর রেকর্ড সংশ্লিষ্ট থানা কিংবা হাসপাতালেও রাখা হয় না। যদি সঠিক তথ্য কর্তৃপক্ষের কাছে না থাকে তাহলে সমস্যা সমাধানের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও গ্রহণ করা যায় না। এর আগে সরকার দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়ক ডিভাইডার তৈরি করেছিল। এতে কিছুটা কাজও হয়। এআরআই থেকে প্রকল্পের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তাতেও অনেকাংশে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা যাবে।     

এআরআই থেকে জানানো হয়, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মোট ৫৩ হাজার ১৯১টি দুঘর্টনা ঘটে। এতে আহত হয়েছে ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। পথচারীকে চাপা কিংবা ধাক্কা দিয়ে ঘটেছে বেশির ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা।

এর সংখ্যা ২৩ হাজার ৯১০টি। তবে মৃত্যুর সঠিক তথ্য তাদের কাছে নেই। ১৯৯৮ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে বলে এআরআইর গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে। এখানে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

সর্বশেষ খবর