শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

শয্যার তিনগুণ রোগী

চট্টগ্রাম মেডিকেলের অর্থোপেডিক বিভাগ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগে কেবল ওয়ার্ড ও বারান্দায় নয়, চিকিৎসকের কক্ষের সামনেও থাকে রোগী। এ ওয়ার্ডের অনুমোদিত শয্যাসংখ্যা ৮৮। কিন্তু প্রতিনিয়তই রোগী ভর্তি থাকে ২৩০ থেকে ২৫০ জন। সর্বোচ্চ ২৯০ জন রোগী ভর্তির রেকর্ডও রয়েছে। জানা যায়, দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত রোগীদের ভর্তি করা হয় এ ওয়ার্ডে। তদুপরি নানামাত্রিক দুর্ঘটনার হার-ধরনও বাড়ছে। কিন্তু বৃহত্তর চট্টগ্রামের জনসাধারণের জন্য ৮৮ শয্যার এ ওয়ার্ডই ভরসা। অথচ এ ওয়ার্ডেই ভর করেছে নানা সংকট-সমস্যা। অপ্রতুল অবকাঠামো ও জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে চলছে। রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে প্রয়োজনীয় সেবা থেকে। তবে অর্থোপেডিক বিভাগের একটি ওয়ার্ড হৃদরোগ বিভাগ দখল করে আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ড, ওয়ার্ডের সামনের বারান্দা, চতুর্থ তলার বারান্দা ও সিড়িতে পর্যন্ত রোগী রাখা হয়েছে। চতুর্থ তলার বারান্দায় ভর্তি রোগী কামাল উদ্দিন বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। ওয়ার্ডে শয্যা না পেয়ে বারান্দায় থাকছি।’ অর্থোপেডিক ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘ওয়ার্ডে জনবল ও অবকাঠামো সংকট দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকট চরমে। নানা সংকট ভর করেই চিকিৎসাসেবা দিতে হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই ওয়ার্ডে।’ ওয়ার্ডের সহযোগী অধ্যাপক ডা. চন্দন কুমার দাশ বলেন, ‘প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা বাড়ছেই। সময় ও রোগ বিবেচনায় অর্থোপেডিক ওয়ার্ডটি স্পর্শকাতর হলেও রোগীরা প্রত্যাশিত সেবা পাচ্ছে না। সমস্যার কারণে আমরাও রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। তবে জরুরি বিষয় হলো, অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে রোগীর মধ্যে অন্য কিছু সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।’

ওয়ার্ডসূত্রে জানা যায়, শয্যার তিন গুণ রোগী ভর্তি থাকে। ১৩ সেপ্টেম্বর ভর্তি ছিল ২৬৮ জন, ওই দিন নতুন ভর্তি হয় ২৮ জন। ১২ সেপ্টেম্বর ভর্তি ছিল ২৬২ জন, নতুন ভর্তি হয় ৫০ জন। ১১ সেপ্টেম্বর ভর্তি ছিল ২৫৭ জন, নতুন ভর্তি হয় ৪৪ জন। ১০ সেপ্টেম্বর ভর্তি ছিল ২৪৬ জন, নতুন ভর্তি হয় ৫২ জন। ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে বড় অপারেশন হয় ৩০-৩৫টি। জরুরি ভিত্তিতে ছোট অপারেশন হয় ৭০টি। তা ছাড়া ২০১৬ সালে মোট চিকিৎসা নেয় ১৪ হাজার ৪৯৫ জন, গড় ভর্তি ছিল ৪০ জন, মারা যায় ৫১ জন, ছোট-বড় জরুরি অপারেশন করা হয় ৬ হাজার ৩০০। জানা যায়, এ বিভাগে অধ্যাপকের কোনো পদ নেই, আছে সহযোগী অধ্যাপকের একটি পদ।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর