রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বরিশালে ইয়াবা নেতার দাপট

মাদকের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই : আ. লীগ

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল মহানগরের রূপাতলী ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রের বিশ্রামাগারের একটি রুমে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম মনির মোল্লার আস্তানায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭০০ পিস ইয়াবাসহ আটকের পর তাকে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গুঞ্জন চলছে, শুক্রবার নগর গোয়েন্দা পুলিশের এই অভিযানে আটক মনির মোল্লাকে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। অথচ মেট্রোপুলিশের রিজার্ভ শাখার কনস্টেবল (কন. নম্বর-১৬৮৮) মো. সাইফুল ইসলামসহ তিনজনকে আটক দেখানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার হলেও এ-সংক্রান্ত মামলায় জব্দ দেখানো হয়েছে ৪৫২ পিস ইয়াবা। সরকারি বিশ্রামাগারে ইয়াবা নেতার আস্তানা আবিষ্কারের ঘটনায় বরিশালের সর্বত্র চলছে তার প্রভাব-প্রতিপত্তি নিয়ে নানা জল্পনা। ওজোপাডিকোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘মনির মোল্লা আওয়ামী লীগের নেতা। বাইরে বিদ্যুৎ না থাকলে তিনি বিভিন্ন সময় বিদ্যুৎ বিভাগের ওই বিশ্রামাগারে এসে বিশ্রাম নেন। বিশ্রামাগারের দায়িত্বরত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা তাকে সুযোগ করে দেন।’ কিন্তু সেখানে মাদকের আস্তানা করা কিংবা ইয়াবা উদ্ধারের বিষয়টি তিনি জানেন না। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মাদকের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। মাদকসহ দলের কেউ আটক হলে তার দায়দায়িত্ব মহানগর আওয়ামী লীগ নেবে না।’ তার প্রশ্ন— মনির মোল্লা যদি মাদকসহ ধরা পড়ে থাকেন তাহলে তাকে পুলিশ ছাড়ল কেন? মনির তার মাদকের নিরাপদ আস্তানা গড়ে তোলেন রূপাতলী ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রের বিশ্রামাগারে। কোনো ধরনের অফিস আদেশ ছাড়াই দিনের পর দিন ওই বিশ্রামাগারের একটি কক্ষ ব্যবহার করে আসছিলেন তিনি। সরকারি এই বিশ্রামাগারেই নিরাপদে মাদক সেবন ও ব্যবসা তদারকি করে আসছিলেন মনির। মনির ও তার ভাই ছাত্রদল নেতা মামুন মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা। জাহিদুল ইসলাম মনির মোল্লা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘বাইরে বিদ্যুৎ না থাকলে তিনি মাঝেমধ্যে রেস্ট হাউসে গিয়ে যে কক্ষ খোলা পেতেন সেখানে একটু বিশ্রাম করতেন।’ তিনি বলেন, তিনি সেখানকার স্কুল পরিচালনা কমিটির বিদ্যোৎসাহী সদস্যও। তিনি কিংবা তার ভাই ছাত্রদল নেতা মামুনের মাদক ব্যবসা ও পুলিশের হাতে তিনি নিজে ইয়াবাসহ আটকের পর টাকার বিনিময়ে ছাড়া পাওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন। কোতোয়ালি থানার সিনিয়র এসআই সত্যরঞ্জন খাসকেল জানান, মনিরসহ তিনজনকে আসামি করে একটি এবং শুধু মনিরকে আসামি করে পৃথক আরেকটি মামলা করেছেন গোয়েন্দা পুলিশের এসআই দেলোয়ার। ওই মামলায় আজ (গতকাল) তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর