শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জাতীয় প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদককে সংবর্ধনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদককে সংবর্ধনা

জাতীয় প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনকে গতকাল সংবর্ধনা দেয় উইমেন জার্নালিস্ট ফোরাম —বাংলাদেশ প্রতিদিন

জাতীয় প্রেস ক্লাবের উন্নয়ন এবং সদস্যদের কল্যাণে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের হলরুমে তাকে দেওয়া সংবর্ধনার জবাবে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সাংবাদিকতায় নারীর পথচলা অনেক আগে শুরু হলেও সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠান ও শীর্ষ সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব পর্যায়ে নারীর উপস্থিতি এখনো হাতে গোনা। আর জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৩ বছরের ইতিহাসে সর্বশেষ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন সাংবাদিক ফরিদা ইয়াসমিন। এই মাইলফলক স্থাপনের জন্য তাকে সংবর্ধনা দিয়েছে বাংলাদেশ উইমেন জার্নালিস্ট ফোরাম। সাংবাদিকদের সবচেয়ে পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীর নেতৃত্ব সেলিব্রেট করতে বিকালের মধ্যে হলরুমে ভিড় করেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক সহকর্মীরা। ফুলেল শুভেচ্ছার পর পাঠ করা হয় মানপত্র। ফরিদা ইয়াসমিনের হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্রেস্ট।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ফরিদা ইয়াসমিন। তিনি বলেন তার এ পর্যায়ে একটু একটু করে এগিয়ে আসার কথা। লক্ষ্য স্থির রেখে সাধনা অব্যাহত রাখলে সাফল্য অবধারিত এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে সবাই নারীবান্ধব নন। বহু ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে আমি আজ এই পর্যায়ে এসেছি। অনেকে ভয় পেয়েছিলেন, তারা ভেবেছিলেন এবার হয়তো প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পদটি হারাতে হবে। কিন্তু আমার প্রতি ভোটারদের আস্থা, ভালোবাসা ও সমর্থনে আমি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছি। এ পর্যায়ে তুলে ধরেন পদে পদে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কথাও। জানতে চান, তিনি নারী বলেই কি তাকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে চলছে এত অসহযোগিতা? তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাব ও এর সদস্যদের স্বার্থে কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করে, হার না মেনে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এই নির্বাচনে যারা আমার জয়ী হওয়ার পথে বাধার সৃষ্টি করে ব্যর্থ হয়েছেন এখনো তারা আমার বিরোধিতা করছেন। তাদের উদ্দেশে আমি বলতে চাই, কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করব না, হারও মানব না। সংগঠনের সভাপতি মমতাজ বিলকিস বানুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের প্রথম সাধারণ সম্পাদক রাশেদা আমিন। অনুষ্ঠানের অন্য বিশেষ অতিথি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সেতারা মূসা অসুস্থতার কারণে আসতে না পারায় তার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বাণী পাঠ করা হয়। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা শাহজাহান মিঞা, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহা, এশিয়ান এইজ পত্রিকার সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, বিএফইউজে মহাসচিব ওমর ফারুক, ডিআরইউ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন নোমানী, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ মাহমুদ, বাসসের সাবেক এমডি মুফাখখারুল আনাম, নিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহ্নাজ মুন্নী, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আঙ্গুর নাহার মন্টি, এটিএন বাংলার প্রধান প্রতিবেদক নাদিরা কিরণ, প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম, নাজনীন আখতার, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের দৌলত আক্তার মালা, বিটিভির দিনার সুলতানা, সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি রোজী ফেরদৌস, সহসভাপতি মাহমুদা চৌধুরী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাভিশনের বার্তা সম্পাদক শারমীন রিনভী।

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রথম নারী সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন। তিনি এক দিনে এটি অর্জন করেননি। ধাপে ধাপে তিনি তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন। আর তিনি যোগ্য বলেই তা সম্ভব হয়েছে।

সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ফরিদা ইয়াসমিনের বিজয়কে সমগ্র নারী জাতির বিজয় বলে উল্লেখ করেন বক্তারা। তারা বলেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী নারী সাংবাদিকদের পথচলা সহজ হয়নি। তবে নারীর অগ্রযাত্রায় প্রেস ক্লাবের প্রথম নারী সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনের ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অনুষ্ঠানে নারী জাগরণী গান ও কবিতা দিয়ে নারী জাগরণকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।

সর্বশেষ খবর