দেশের অর্থনীতির প্রাণ ভোমরা চট্টগ্রাম বন্দরে চরম আকার ধারণ করেছে লাইটার সংকট। ফলে বহির্নোঙ্গরে অবস্থান করা বড় জাহাজগুলো থেকে পণ্য খালাসে দেখা দিয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। এতে করে বহির্নোঙ্গরে অবস্থান করা জাহাজের বেড়েছে গড় অবস্থানকাল। তাই বাড়তি জরিমানা গুনতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। একই সঙ্গে বহির্বিশ্বে সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে বন্দরের। চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল এম খালেদ ইকবাল বলেন, ‘লাইটার জাহাজ সমস্যা সমাধান করতে এক বছর ধরে কাজ করছি। এ বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রী ও অধিদফতরকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ২০০ লাইটার জাহাজের লাইসেন্স দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। আশা করছি অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।’
চট্টগ্রাম চেম্বারে সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘প্রতি বছর ২০ শতাংশ করে আমদানি বাড়লেও সে হারে লাইটার জাহাজের সংখ্যা বাড়েনি। উল্টো গত কয়েক বছর ধরে লাইটার জাহাজ তৈরি ও আমদানি বন্ধ রেখেছে সরকার। ফলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে বহির্নোঙ্গরে পণ্য খালাসে।’ তিনি বলেন, বহির্নোঙ্গরে অতিরিক্ত সময় অবস্থানের জন্য জাহাজের রকমভেদে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ডলার পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ গুনতে হয় আমদানিকারকদের। এতে বিদেশে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। দেশের স্বার্থে এ বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা কন্টেইনারবিহীন পণ্য খাদ্যশস্য, সিরামিক শিল্পের কাঁচামাল, কয়লা, পাথর, সিমেন্ট এবং সারসহ কিছু পণ্য বড় জাহাজে করে আমদানি করা হয়। পণ্যবাহী এসব বড় জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারে না বলে বহির্নোঙ্গরে পণ্য খালাস করতে হয়। বড় এ জাহাজগুলো জেটি থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে সাগরে নোঙর করে। বড় জাহাজে করে আসা এসব পণ্যের ৭৪ শতাংশই খালাস হয় বহির্নোঙ্গরে। পরে ক্রেনের সাহায্যে লাইটার জাহাজে ভরা হয়। বড় জাহাজ থেকে খালাসের পর তা লাইটার জাহাজের মাধ্যমে চট্টগ্রাম, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের ৩৯টি ঘাট দিয়ে পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে। বহির্নোঙ্গরে বড় জাহাজ থেকে আমদানি করা পণ্য স্থানান্তরের জন্য লাইসেন্স রয়েছে ১ হাজার ২০০ লাইটার জাহাজের। কিন্তু সচল রয়েছে ৯শ’র মতো লাইটার জাহাজ।